top of page

রাজ্যে আগামীকাল থেকেই শুরু এসআইআর, চূড়ান্ত তালিকা ৭ ফেব্রুয়ারি

ree


কলকাতা, ২৭ অক্টোবর ২০২৫: আগামীকাল থেকেই শুরু এসআইআর। সোমবার দুই নির্বাচন কমিশনার, এসএস সান্ধু ও বিবেক যোশীকে পাশে বসিয়ে দেশের ১২টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভোটার তালিকার ‘বিশেষ নিবিড় সংশোধন’ (এসআইআর) চালুর ঘোষণা করে দিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জ্ঞানেশ কুমার। তিনি এই ঘোষণা করার পাশাপাশি স্পষ্ট নির্দেশ দিলেন, কোনও যোগ্য যাতে বাদ না পড়েন, কোনও অযোগ্য যাতে ঠাঁই না পান। বিহারে সফল ভাবে এসআইআর হয়েছে।

দ্বিতীয় পর্বের এসআইআর (প্রথম পর্বে হয়েছে বিহারে) হবে পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, কেরল, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়, গোয়া, গুজরাত, লাক্ষাদ্বীপ, মধ্যপ্রদেশ রাজ্যে এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পুদুচেরি, আন্দামান ও নিকোবরে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, কেরল এবং পুদুচেরিতে আগামী বছরের এপ্রিল-মে মাসে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। কিন্তু ওই চার বিধানসভার সঙ্গেই ভোট হতে যাওয়া অসমে এবারে এসআইআর হচ্ছে না। মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের দাবি, অসমের এনআরসির কাজ প্রায় শেষের দিকে। পরবর্তীতে সেখানে হবে এসআইআর। সিইসি জানিয়েছেন, সোমবার রাত ১২টাতেই সংশ্লিষ্ট ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ভোটার তালিকা ফ্রিজ করে দেওয়া হবে। অর্থাৎ রাত ১২টা থেকে ভোটার তালিকা সংক্রান্ত সব কাজ বন্ধ থাকবে। ২৮ অক্টোবর (মঙ্গলবার) থেকে শুরু হচ্ছে এনুমেরেশন ফর্ম (সংখ্যা যাচাই সংক্রান্ত আবেদনপত্র) ছাপানোর কাজ। একই দিনে শুরু হবে বিএলওদের প্রশিক্ষণের কাজ। যা চলবে আগামী ৩ নভেম্বর পর্যন্ত।

ভোটারদের ‘এনুমারেশন ফর্ম’ দেওয়া হবে। যাঁরা চাইবেন, তাঁরা অনলাইনেও ‘এনুমারেশন ফর্ম’ পূরণ করতে পারবেন। পশ্চিমবঙ্গে ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় যে মানুষদের নাম ছিল বা বাবা-মায়ের নাম ছিল, তাঁদের ক্ষেত্রে ওই তালিকাই প্রামাণ্য বলে বিবেচনা করা হবে। যে তালিকা নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধির কাছে থাকবে। তাঁরা কমিশন নির্ধারিত কোনও একটি নথি চাইতে পারেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির থেকে। যে ব্যক্তিদের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় ছিল না, তাঁদের যে কোনও একটি নথি দেখাতে হবে।



এসআইআরের জন্য কী কী নথি লাগবে?



১) মাধ্যমিক বা তার বেশি কোনও শিক্ষাগত সার্টিফিকেট।


২) বাড়ি বা জমির দলিল।


৩) পাসপোর্ট।


৪) ১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের আগে থাকা পোস্ট অফিস, ব্যাঙ্ক, এলআইসি (জীবন বিমা নিগম) বা স্থানীয় প্রশাসনের প্রদান করা কোনও নথি।


৫) জাতিগত শংসাপত্র।


৬) স্থানীয় প্রশাসনের তরফে যে পারিবারিক রেজিস্ট্রার দেওয়া হয়, সেটি।


৭) যাঁরা কেন্দ্রীয় সরকারি বা রাজ্য সরকারি কর্মী ছিলেন, তাঁদের পরিচয়পত্র।


৮) ফরেস্ট রাইট সার্টিফিকেট।


৯) জাতিগত শংসাপত্র।


১০) রাজ্য সরকার কর্তৃক প্রদেয় বাসস্থানের শংসাপত্র।


১১) রাজ্য সরকারের তরফে যে বাসস্থানের শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে, সেটিও বৈধ নথি হিসেবে বিবেচনা করা হবে।


সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো পরিচয়পত্র হিসেবে আধার কার্ড দেখানো যাবে। কিন্তু তা নাগরিকত্বের প্রমাণ হবে না। নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য আধার কার্ডের সঙ্গে ওই ১১টি নথির মধ্যে যে কোনও একটি দেখাতে হবে।


৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনুমেরেশন ফর্ম দেওয়া হবে। কেউ রাজ্যের বাইরে গেলে বা প্রবাসীরা অনলাইনেও ফর্ম ভরতে পারবেন। অন্য দিকে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে ৯ ডিসেম্বর। এই তালিকা নিয়ে অভিযোগ থাকলে ৯ ডিসেম্বর থেকে ৮ জানুয়ারির মধ্যে জানাতে হবে। পরবর্তী পর্যায়ে ৯ ডিসেম্বর থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে অভিযোগ শোনা এবং খতিয়ে দেখার কাজ। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হবে ৭ ফেব্রুয়ারি। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, আজ পর্যন্ত যাঁদের নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, তাঁরা সকলে এনুমারেশন ফর্ম পাবেন। যাঁরা এনুমারেশন ফর্ম জমা দেবেন, তাঁদের সকলের নাম খসড়া তালিকায় উঠবে।

ভোটার তালিকায় নাম থাকবে কাদের, সে বিষয়ে কমিশনের নির্দেশিকায় চারটি শর্তের কথা বলা হয়েছে— ১. ভারতীয় নাগরিক হতে হবে ২. ১৮ বছর বা তার বেশি বয়স হতে হবে ৩. সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় থাকতে হবে ৪. কোনও আইনে ভোট দেওয়ার অধিকার বাতিল হলে চলবে না। তবে জীবিকা বা অন্য কারণে কেউ বাইরে থাকলে তাঁকে অনলাইনে ফর্ম পূরণ করতে হবে। ‘ইসিআই নেট অ্যাপ’ থেকে তথ্য আপলোড করা যাবে। দু’জায়গায় কারও নাম থাকলে দুটো ফর্মে আবেদন করা হলেও একটি নাম গ্রহণ করা হবে। সেন্ট্রাল ভাবে বিএলও পোর্টালে তথ্য উঠলে, একটি নাম নিজে থেকেই বাদ হয়ে যাবে। খসড়া ভোটার তালিকায় নাম উঠলেও যাঁদের নাম ‘ম্যাপিং’-এ নেই, তাঁরা সকলে চূড়ান্ত তালিকায় ঠাঁই না-ও পেতে পারেন। যাঁদের নাম ‘ম্যাপিং’-এ নেই কিন্তু ১২টি নথির (আধার-সহ) কোনও একটি বা একাধিক রয়েছে, তাঁদের প্রত্যেকের ক্ষেত্রে শুনানি হবে। তার পর হবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।

ভোটার তালিকায় ‘ম্যাপিং’-এর অর্থ— এ বছর প্রকাশিত সর্বশেষ ভোটার তালিকার সঙ্গে ২০০২ সালে শেষ এসআইআর-তালিকা মিলিয়ে দেখা। দুই তালিকায় কত জনের নাম অভিন্ন, দেখা হয় তা। সঙ্গে দেখা হয়, এখনকার ভোটার তালিকায় থাকা কোনও ভোটারের মা-বাবার নাম গত এসআইআরের তালিকায় রয়েছে কি না। এই মিল পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টেরা চিহ্নিত হয়ে যান এমনিতেই।


মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজকুমার আগরওয়াল। তার আগে বিকেল ৪টেয় সর্বদল বৈঠক ডেকেছেন তিনি।

 
 
 

Comments

Rated 0 out of 5 stars.
No ratings yet

Add a rating

Top Stories

প্রতিদিনের খবর এবং বিভিন্ন ফিচার ভিত্তিক লেখা, যেখানে খবরের সত্যতা তথা লেখনীর উৎকৃষ্টতা প্রাধান্য পায়। ফিচার ছাড়াও যে কোনও রকম লেখনী শুধুমাত্র উৎকৃষ্টতার নিরিখে গুরুত্ব পাবে এই সাইটে

Thanks for subscribing!

  • Whatsapp
  • Youtube
  • Instagram
  • Facebook
  • Twitter

The Conveyor

bottom of page