হাইকোর্টের রায় বহাল, অনিকেতকে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালেই পোস্টিং দিতে হবে- জানাল শীর্ষ আদালত
- The Conveyor
- 4 days ago
- 2 min read

কলকাতা, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫: হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে অনিকেতকে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালেই পোস্টিংয়ের নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত। রায়গঞ্জ নয়, অনিকেতকে পোস্টিং দিতে হবে আরজি কর হাসপাতালেই। আর সেই নির্দেশ কার্যকর করার জন্য রাজ্য সরকারকে দু'সপ্তাহের ডেডলাইনও বেঁধে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের বিচারপতি জেকে মহেশ্বরী এবং বিচারপতি বিজয় বিষ্ণোইয়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে যে দু'সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যকে সেই নির্দেশ কার্যকর করতে হবে।
এই মামলায় এ দিন প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় রাজ্য সরকারকে। বিচারপতিরা প্রশ্ন করেন, সকলের ক্ষেত্রে এসওপি মেনে তালিকা তৈরি হলেও, কেন এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হলো? পাল্টা রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল জানালেন, একজন সরকারি কর্মী বা চিকিৎসক, নিজের পছন্দমতো জায়গা বেছে নিতে পারেন না। শীর্ষ আদালতের পাল্টা প্রশ্ন, এ ক্ষেত্রে এসওপি কেন মানা হলো না, তার উত্তর কী? কেন মেধার ভিত্তিতে পোস্টিং দেওয়া হবে না? এর কোনও জবাব রাজ্য দিতে পারেনি। এর পরেই সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, অনিকেত মাহাতোকে আরজি কর হাসপাতালেই পোস্টিং দিতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টে স্বস্তি পেলেন অনিকেত মাহাতো। আরজি করের অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগেই পোস্টিং দিতে হবে অনিকেতকে। আরজি করে চিকিৎসক তরুণীকে ধর্ষণ-খুনের পর রাজ্য জুড়ে যে গণআন্দোলন শুরু হয়েছিল, তার অন্যতম মুখ ছিলেন অনিকেত। গত মে মাসে জানা যায়, এ হেন অনিকেতকে পোস্টিং দেওয়া হয়েছে রায়গঞ্জে। পাশাপাশি আন্দোলনের আরও দুই মুখ দেবাশিস হালদার এবং আসফাকুল্লা নাইয়াকেও যথাক্রমে মালদহের গাজোল এবং হুগলির আরামবাগে পোস্টিং দেওয়া হয়। এ নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন অনিকেত। আলাদা করে মামলা করেন বাকিরাও। তাঁদের প্রশ্ন ছিল, যদি যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও পছন্দ মতো পোস্টিং না পাওয়া যায়, তা হলে কাউন্সেলিং-এর অর্থ কী? মেধাতালিকারই বা কী প্রয়োজন? শুধু তা-ই নয়, মেধাতালিকায় বেছে বেছে শুধুমাত্র তাঁদের তিন জনকেই দূরে পোস্টিং দেওয়ার বিষয়টিকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক’ বলেও ব্যাখ্যা করেছিলেন তাঁরা।
অনিকেতের পোস্টিং নিয়ে রাজ্যের সিদ্ধান্ত গত সেপ্টেম্বর মাসেই খারিজ করে দিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। তিনি জানিয়েছিলেন, রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ নয়, আরজি করেই পোস্টিং দিতে হবে অনিকেতকে। আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, এ সব ক্ষেত্রে যে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিয়োর বা এসওপি মেনে চলা হয়, অনিকেতের ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। এতে সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারা অর্থাৎ সমানাধিকারের ধারা অমান্য করা হয়েছে। রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য। কিন্তু বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চও সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ বহাল রাখে। সব শেষে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। অনিকেতের আরজি করে পোস্টিং রুখতে সুপ্রিম কোর্টে স্পেশ্যাল লিভ পিটিশন দাখিল করা হয়। সেই আবেদনের শুনানিতেই এ বার ধাক্কা খেল রাজ্য।













Comments