মহাকাশচারী শুভাংশু শুক্ল এবং তাঁর সঙ্গীদের শুরু হয়ে গেল ‘আনডকিং’ প্রক্রিয়া
- The Conveyor
- Jul 14
- 2 min read

১৪ জুলাই, ২০২৫: এক্সিওম মিশন ৪ (Ax-4) ১৪ জুলাই আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (ISS) থেকে বিচ্ছিন্ন হল। শুরু হয়ে গেল ‘আনডকিং’ প্রক্রিয়া। বিকেল ৪টে ৪৫ মিনিট (ভারতীয় সময়)-এ মহাকাশকেন্দ্র থেকে বিচ্ছিন্ন হয় শুভাংশুদের মহাকাশযান। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামীকাল ভারতীয় বেলা ৩টে নাগাদ আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া উপকূলে নামার কথা। র কিছুক্ষণের অপেক্ষা। মহাকাশের আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন থেকে পৃথিবীতে ফিরছেন ভারতীয় মহাকাশচারী শুভাংশু শুক্ল এবং তাঁর সঙ্গীরা।
গত ২৫ জুন স্পেসএক্সের ‘ড্রাগন’ মহাকাশযানে চড়ে আইএসএসের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন শুভাংশুরা। তাঁর সঙ্গে গিয়েছেন অ্যাক্সিয়ম-৪-এর ক্রু-কমান্ডার পেগি হুইটসন, মিশন বিশেষজ্ঞ স্লাওস উজানস্কি-উইজ়নিউস্কি এবং টিবর কাপু। আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে আগেই বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল শুভাংশু এবং তাঁর সঙ্গী তিন মহাকাশচারীকে। সেই সময় রাকেশ শর্মার উক্তির রেশ ধরে শুভাংশু বলেছিলেন, ‘‘ভারত আজও ‘সারে জঁহা সে আচ্ছা’।’’ মহাকাশ থেকে বেশ কয়েকটি ছবি পাঠিয়েছিলেন শুভাংশু। মহাকাশ থেকে ঝলমলে পৃথিবীর বেশ কিছু সুন্দর ছবি দেখেছিলাম আমরা। শুভংশু শুক্লাকে তাঁর ক্রু সদস্যদের সাথে ভোজ করতে দেখা গিয়েছিল। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে থাকাকালীন শুভংশু শুক্লা পেট্রি ডিশে মুগ এবং মেথি নিয়েও কাজ করেছিলেন। এর ছবিও তিনি শেয়ার করেছেন। আন্তর্জাতিক স্পেস সেন্টার থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে প্রায় ১৮ মিনিট কথাও বলেন তিনি।
ছেলের ফিরে আসার খবরে খুশি শুভাংশুর মা আশা শুক্লা। তিনি সংবাদসংস্থা ANI-কে জানিয়েছেন, ‘খুব ভালো লাগছে। ১৮ দিন পর আমার ছেলে পৃথিবীতে ফিরছে। মনে হচ্ছে ছুটে গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরি। কিন্তু তা সম্ভব নয়। দেশবাসী আমার ছেলের জন্য প্রার্থনা করছে। সকলের আশীর্বাদ ওর সঙ্গে রয়েছে। সবই সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্য। তাঁকে অনেক ধন্যবাদ।’
ভারতের মহাকাশ মিশনের প্রথম ধাপটি শেষ হচ্ছে অ্যাক্সিওম-৪ মিশনের মাধ্যমে। যা মিশন ‘আকাশ গঙ্গা’ নামেও পরিচিত। এখনও পর্যন্ত বিষয়টি তেমন জটিল ছিল না। মহাকাশচারী শুক্লা দেশে ফিরে আসার পরেই শুরু হবে ভারতের আসল পরীক্ষা। মহাকাশ স্টেশনে ১৮ দিন থেকে শুক্লা যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, সে সব কিছুই ব্যবহার করা হবে ভারতের নিজস্ব মহাকাশ মিশনে। ভারতের এই মহাকাশ মিশনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘গগনযান’। এই মিশনের জন্য ৩৩,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে ভারত। যার ফলে ২০৪০ সালের মধ্যে একজন ভারতীয়কে চাঁদে পাঠানো সম্ভব হবে।
নাসা জানিয়েছে, আইএসএস থেকে আলাদা হওয়ার পরেই শুভাংশুদের ক্যাপসুল পৃথিবীর দিকে এগোতে শুরু করবে। এই সময়ে ক্যাপসুলের গতি কমানোর জন্য এক বার রকেট নিক্ষেপ করা হবে। একে বলে ‘রেট্রোগ্রেড বার্ন’। মহাকাশযানটি যাতে নিরাপদে, নির্বিঘ্নে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণে প্রবেশ করতে পারে, তা নিশ্চিত করে এই ‘রেট্রোগ্রেড বার্ন’। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের পর দু’টি প্যারাশুট খুলবে শুভাংশুদের ক্যাপসুল থেকে। প্রথমটি ছোট। তার ফলে গতি সামান্য কমবে। তার পর নির্দিষ্ট দূরত্বে পৌঁছোনোর পরে খুলে যাবে মূল প্যারাশুটটি। নাসা জানিয়েছে, যদি আবহাওয়া অনুকূল থাকে, ক্যালিফর্নিয়ার উপকূলে প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝে ধীরে ধীরে নামবে শুভাংশুদের ক্যাপসুল। মহাকাশ থেকে ফিরে আসার পরে শুভাংশু-সহ সকলকে সাত দিনের ‘রিহ্যাবিলিটেশন’-এ রাখা হবে। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্যেই এই ব্যবস্থা।













Comments