top of page

পুজো অনুদান এক ধাক্কায় বাড়ল ২৫ হাজার টাকা

ree


কলকাতা, ৩১ জুলাই, ২০২৫: বাড়ল আরও ২৫ হাজার টাকা। ৮০ শতাংশ ছাড় বিদ্যুতের বিলে। বৃহস্পতিবার কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্যের ছোট- বড় বিভিন্ন পুজো কমিটির উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই এই ঘোষণা করেন ক্লাব কর্তাদের উদ্দেশ্যে। উক্ত অনুষ্ঠানে উদ্যোক্তাদের এ বছর ১ লাখ ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ঘোষণা করেছেন, আগামী ৫ অক্টোবর পুজো কার্নিভাল হবে কলকাতায়। তার আগে ২, ৩ এবং ৪ অক্টোবর— এই তিন দিন প্রতিমা বিসর্জন হবে।

নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তা, কলকাতা পুলিশের শীর্ষ আধিকারিক এবং ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’ সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে ছিলেন রাজ্যের প্রশাসনিক শীর্ষকর্তারা, কলকাতা পুরসভা, দমকল বিভাগ, সিইএসসি, পুলিশ প্রশাসন, পরিবহণ ও স্বাস্থ্য দফতরের মতো পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার প্রতিনিধিরা। বিদ্যুতের বিলে ৮০ শতাংশ ছাড় ছাড়াও ফায়ার লাইসেন্স-সহ অন্যান্য সরকারি ফি মকুব করা হচ্ছে। ২০১৮ সাল থেকে রাজ্যের পুজো কমিটিগুলোকে আর্থিক অনুদান দেওয়া শুরু করে রাজ্য সরকার। প্রথম বছর ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছিল। তার পর থেকে প্রতি বছর লাফিয়ে লাফিয়ে অনুদান বাড়ছে।

যদিও রাজ্য সরকারের পুজোর অনুদান নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। হাই কোর্টের নির্দেশ রয়েছে, সরকারের অনুদানের অর্থ প্রতিমা কেনা, দশকর্মার জিনিস, ঢাকি বা পুরোহিতকে দক্ষিণা দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে না। পুজো কমিটিগুলোকে ওই টাকা সাধারণ মানুষের স্বার্থে কোনও সামাজিক কাজে ব্যবহার করতে হবে।

সরকারি অনুদান থেকে শুরু করে বিশেষ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, মহিলাদের জন্য পিঙ্ক পুলিশ, স্বাস্থ্য পরিষেবা— সমস্ত ক্ষেত্রেই পুজোর সময় নজরদারি বাড়ানো হয়। এ বারও যাতে তার অন্যথা না হয়, সেই নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি, পুজোমণ্ডপগুলিতে কড়া নজরদারি রাখার কথাও বলেছেন। তিনি জানান, ড্রোন, সিসি ক্যামেরা, ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে নজরদারি চালাতে হবে। মণ্ডপে আসা মহিলাদের নিরাপত্তা, প্রবীণদের সুবিধার দিকটিও পুজো কমিটিগুলিকে খেয়াল রাখতে বলেছেন তিনি। ভিড় এড়াতে পৃথক এন্ট্রি ও এক্সিট গেট করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুজো প্যান্ডেলে দর্শনার্থীদের জন্য ‘কী করবেন, কী করবেন না’ ব্যানার দেওয়ার কথাও জানানো হয়। পুজোর দিনগুলিতে কলকাতার মেট্রোর সংখ্যা বাড়ানোর ব্যাপারে মুখ্যসচিবকে আলোচনা করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, কলকাতা পুলিশ এবং রাজ্য পুলিশের মধ্যে যেন সমন্বয় থাকে। সব কন্ট্রোলরুমকে সারাক্ষণ সক্রিয় রাখতে হবে। বিসর্জনের জায়গায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করতে হবে।

এই অনুদান বাড়ানোর প্রসঙ্গে বিরোধীদের দাবি, গত বছর লোকসভা ভোট ছিল। তৃণমূল তাতে ভাল ফল করেছিল। সে বছর অনুদান বৃদ্ধি করে পুজো কমিটিগুলিকে ‘পুরস্কার’ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বছর ‘উৎসাহ’ দিলেন! আগামী বছর ভোটের সময় যাতে তারা তৃণমূলের হয়েই কাজ করে। উল্লেখ্য, গত বছর আরজি কর আন্দোলনের আবহে রাজ্য সরকারের দেওয়া পুজোর অনুদান ফিরিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল কিছু পুজো কমিটি। গত বছর যে সব পুজো কমিটি অনুদান নেয়নি, তারা এ বার অনুদান নেয় কি না, এখন সেটাও দেখার।

তবে এটাও ঠিক, যেভাবে চাকরির জন্য চাকরিপ্রার্থীরা রাস্তায় নেমেছেন, সরকারি কর্মচারীরা সঠিক ডিএ পাচ্ছেন না, সেক্ষেত্রে প্রত্যেক পুজো কমিটিকে এত এত টাকা অনুদান দেওয়া বাতুলতা। এ কথা ঠিক, আমাদের রাজ্যে পুজো একটি বিশাল মহোৎসব, ইউনেস্কোর গুরুত্ব পেয়েছে। তবুও বলার, সব কিছুর সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে তবেই যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। এক ধাক্কায় প্রতি ক্লাবের জন্য এতগুলো করে টাকা বাড়ানো মানে সরকারের প্রচুর অর্থের সমাগম লাগবে, খুব স্বাভাবিকভাবেই অন্যান্য খাতে তার জের পড়বেই। প্রয়োজনীয় জায়গায় অর্থের টান পড়বে তা বলাই বাহুল্য।

 
 
 

Comments

Rated 0 out of 5 stars.
No ratings yet

Add a rating

Top Stories

প্রতিদিনের খবর এবং বিভিন্ন ফিচার ভিত্তিক লেখা, যেখানে খবরের সত্যতা তথা লেখনীর উৎকৃষ্টতা প্রাধান্য পায়। ফিচার ছাড়াও যে কোনও রকম লেখনী শুধুমাত্র উৎকৃষ্টতার নিরিখে গুরুত্ব পাবে এই সাইটে

Thanks for subscribing!

  • Whatsapp
  • Youtube
  • Instagram
  • Facebook
  • Twitter

The Conveyor

bottom of page