২৬০০ বছর পুরনো উদ্ধার হওয়া কাঠামোর জায়গায় খননকাজ চালাবে বিহার সরকার
২০ ডিসেম্বর, ২০২৩: ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে বিহারের বাঁকা জেলায় ২৬০০ বছরের পুরনো একটি কাঠামোর অবশিষ্টাংশ উদ্ধার হয়েছিল, সেখানে খননকাজ চালানো হবে বলে স্থির করেছে বিহার রাজ্য সরকার। এছাড়াও চিনের পরিব্রাজক হিউয়েন সাংয়ের পরিদর্শন করা বৌদ্ধস্তূপগুলিতে গবেষণার কাজ শুরু করতে চলেছে ওই রাজ্য। ভারতীয় পুরাতাত্বিক সর্বেক্ষণ (আর্কিয়োলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া) সম্প্রতি সে রাজ্যের শিল্প, সংস্কৃতি ও যুব মন্ত্রকের শাখা ‘বিহার হেরিটেজ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (বিএইচডিএস)’-কে এই দু’টি জায়গা খতিয়ে দেখার অনুমতি দিয়েছে।
বাঁকা জেলার ভাদরিয়া গ্রামে এই খননকাজ চলবে। ভাদরিয়া গ্রামটি চন্দন নদীর তীরে অবস্থিত। চিনের পরিব্রাজক হিউয়েন সাংয়ের পরিদর্শন করা বৌদ্ধস্তূপগুলি বিহারের বৈশালী জেলায় রয়েছে। সেখানে চলবে গবেষণার কাজ। এই প্রসঙ্গে রাজ্যের শিল্প, সংস্কৃতি ও যুব বিভাগের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব হরজ্যোত কউর বামরাহ বলেন, ‘‘এটা প্রমাণিত যে ভাদরিয়া একটি ঐতিহাসিক স্থান। প্রাথমিক গবেষণা অনুযায়ী, ওই জায়গায় আবিষ্কৃত ধ্বংসাবশেষ ২৬০০ বছরের পুরনো।’’ বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইতিমধ্যেই বাঁকা জেলা এবং আশপাশের অঞ্চলগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই এলাকাগুলিতে মাটির নীচে আর কোনও প্রাচীন কাঠামো রয়েছে কি না, তা-ও খুঁজতে তৎপর হয়েছে বিহার সরকার। মাটির নিচে যে কাঠামো পাওয়া গিয়েছে সে সব সম্বন্ধে খোঁজখবর নিতে ইতিমধ্যেই আইআইটি কানপুরের বিশেষজ্ঞদের একটি দল ভাদরিয়া গ্রামে সমীক্ষা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন হরজ্যোত।
উল্লেখ্য, বাঁকার মন্দার পর্বতের উল্লেখ রয়েছে হিন্দু পুরাণে। বিএইচডিএসের এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর বিজয়কুমার চৌধুরি জানান, পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী, সমুদ্রমন্থনের সময় অমৃত আহরণের জন্য মন্দার পর্বত ব্যবহার করা হয়েছিল। এছাড়াও প্রাচীন বৌদ্ধ সাহিত্যেও ভাদরিয়াকে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রাচীন বৌদ্ধ সাহিত্য অনুযায়ী এই গ্রামে বুদ্ধ স্বয়ং এসেছিলেন।
বিজয়কুমার আরও জানান, হিউয়েন সাং- এর ঘুরে দেখা জায়গাগুলি নিয়ে এর আগে কোনও পদ্ধতিগত কাজ হয়নি। কিন্তু এখন ভারতীয় পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণের অনুমতি পাওয়ার পর সরকার সেই কাজে হাত দিতে চলেছে। তবে দক্ষিণ বিহারে হিউয়েন যে জায়গাগুলি পরিদর্শন করেন, তার মধ্যে পটনা, জেহানাবাদ, গয়া, নওয়াদা, নালন্দা অঞ্চলের সমস্ত প্রধান পাহাড়গুলিতে গবেষণা চালানো হয়েছে। বেশ কয়েক বছর নালন্দা ও বৈশালীতে কাটিয়েছিলেন হিউয়েন। সেখানকার কোনও তথ্য নেই। তাই সেই জায়গাগুলিতে নতুন করে গবেষণা করতে চলেছে বিহার সরকার।
Comments