লোকসভার স্পিকার পদ মনোনয়ন নিয়ে দিনভর সংসদ সরগরম শাসক এবং বিরোধী দলের তরজায়
২৫ জুন, ২০২৪: আজ মঙ্গলবার ১৮ তম লোকসভার স্পিকার পদের মনোনয়ন পেশ হল। এনডিএ-র তরফে স্পিকার পদপ্রার্থী হলেন ওম বিড়লা। পাশাপাশি বিরোধী জোটের স্পিকার পদপ্রার্থী হিসেবে নমিনেশন ফাইল করলেন কংগ্রেসের ৮ বারের সাংসদ কে সুরেশ। ৫৪৩ আসনের লোকসভায় স্পিকার নির্বাচিত হওয়ার জন্য প্রয়োজন ২৭২ জন সাংসদের সমর্থন। বিজেপি-সহ এনডিএ শিবিরে রয়েছেন ২৯৩ জন। ফলে হিসাব অনুযায়ী ওমের জয় নিশ্চিত। লোকসভার ঐতিহ্য মেনে এবারে সর্বসম্মতিতে পুনর্নির্বাচন হচ্ছে না তাঁর। মঙ্গলবার লোকসভা স্পিকার মনোনয়ন নিয়ে সকাল থেকে দিল্লিতে শুরু হয়েছে এনডিএ-বনাম কংগ্রেসের বাগযুদ্ধ।
উল্লেখ্য, ডেপুটি স্পিকার চেয়ে সরকারের তরফে সম্মতি পায়নি কংগ্রেস। স্পিকারকে সমর্থনের আগে ডেপুটি স্পিকারের নাম ঠিক করতে বলেছিল বিরোধী জোট ইন্ডিয়া। এনডিএ-র দাবি, রাজনাথ তাঁদের বলেন, নির্বাচনের পরে এ বিষয়ে বসে কথা বলবেন। কিন্তু কংগ্রেস এবং বিরোধীরা সেই শর্তে রাজি হননি। ডেপুটি স্পিকারের পদ বিরোধী শিবিরকেই দেওয়ার প্রচলন রয়েছে বলে সংসদে দাঁড়িয়ে মন্তব্য করেছেন রাহুল গান্ধী। এনডিএ-র যুক্তি, কখনওই এমন কোনও নিয়ম প্রচলিত ছিল না। যদিও লোকসভার ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাচ্ছে, সংসদে স্বীকৃত বিরোধীরা সব সময়েই ডেপুটি স্পিকারের পদ পেয়েছেন। যদিও অধিকাংশ সরকারেই স্বীকৃত বিরোধী দল ছিল না লোকসভায়। যে যে সরকারে ছিল, তাঁরা ডেপুটি স্পিকারের পদ পেয়েছিলেন। যেমন অটল বিহারী বাজপেয়ী বা মনমোহন সিংহের সরকারে। ডেপুটি স্পিকার বেছে নেওয়া হয়েছিল বিরোধী শিবির থেকেই। এটাও ঠিক, স্পিকার পদপ্রার্থী একতরফাভাবে সরকারে উপবিষ্ট দল চূড়ান্ত করতে পারেনা। কিন্তু বিজেপি তাই করছে, তাদের সুবিধার্থে। যেটা অবশ্যই উচিত কাজ নয়।
বিরোধীদের সঙ্গে কথা বলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজনাথ সিংহ ও কিরেণ রিজিজুকে। এদিকে স্পিকার নির্বাচন নিয়ে কংগ্রেস যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। এ ব্যাপারে তৃণমূলের সঙ্গে তারা কোনও রকম আলোচনা করেনি বলে জানিয়ে দিলেন তৃণমূল সাংসদ তথা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও এই কথা বলার কিছু পরেই অভিষেককে দেখা যায় সংসদের ভিতরে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে একান্তে কথা বলতে। তবে সেই আলোচনার পরে রাহুল আলাদা করে অভিষেকের বক্তব্যের কোনও জবাব দেননি। অভিষেকও নতুন করে কিছু বলেননি।
আসলে ডেপুটি স্পিকার পদ বিরোধীরা পেলে তবেই এনডিএ সমর্থিত স্পিকারকে ইন্ডিয়া জোট সমর্থন করবে- এমনই বলেছিলেন রাহুল। এই অব্দি কোনও সমস্যা ছিলনা। কিন্তু নিজেদের বিরোধী জোটের স্পিকার হিসেবে কে সুরেশকে মনোনয়নের ব্যাপারে রাহুল অন্যান্য শরিকদের সঙ্গে আলোচনা করেননি। তাই নিয়েই মূলত সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এবার দেখার কোথা থেকে কী দাঁড়ায়!
Comments