
স্বর্ণালী গোস্বামী
22 Jun 2025
ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যকার সম্পর্ক ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত বেশ সৌহার্দ্যপূর্ণ ছিল। কিন্তু এই সম্পর্ক খারাপ হয় যখন আয়াতুল্লাহ ইসলামি বিপ্লবের মাধ্যমে তেহরানের ক্ষমতা দখল করে
মাদার টেরেসা নোবেল শান্তি পুরস্কার যখন পান, তখন আমি ক্লাস ওয়ান। কিছু বোঝার মত বয়স হয়নি। তবে স্কুলের অ্যাডমিশনের পরীক্ষায় জেনারেল নলেজ হিসেবে কিছু প্রশ্নের সঙ্গে এই নামটি এবং ফুটবলের রাজা পেলে- র নামটি জড়িয়ে গিয়েছিল আমার সঙ্গে। প্রথমটি আমি মুখস্ত করে গিয়েছিলাম এবং দ্বিতীয়টি আমায় মৌখিক পরীক্ষায় ধরা হয়েছিল, যার উত্তর আমি জানতাম না। পরে বাবা খুব আফসোস করেছিল, কেন এটা আমায় শেখায়নি, তাই ভেবে। কারন বাবা এক সময়ের প্রথিতযশা ফুটবল প্লেয়ার ছিল নিজের এলাকায়। তো সেই সময় থেকে নোবেল প্রাইজের বিষয়টি আমার মধ্যে গেঁথে গিয়েছিল। ছোট থেকেই প্রশ্ন করার এক স্বাভাবিক অভ্যেস আমার। তা সে উত্তর পাই বা না পাই। বকুনিও খেতে হয়েছে অনেক এ নিয়ে। সে যাই হোক, প্রসঙ্গ থেকে সরে আসছি।
এই যে আমি নোবেল শান্তি পুরস্কারের সঙ্গে পরিচিত হলাম, জীবনের শুরুতে, সেই আমি জীবনের মাঝবয়সে পৌঁছে এক নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রাপককে দেখছি আমার পড়শি দেশে, আর এক নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রাপকের নাম মনোনিত করল আমার আর এক পড়শি দেশ- যা দেখে- শুনে ভিরমি খাওয়ার জোগাড় হওয়াই উচিত যে কারুর। কিন্তু যেহেতু জীবনের অর্ধশতক পূর্ণ করে ফেলেছি, তাই ঠোঁটে এক চিলতে বাঁকা হাসি ছাড়া আমার এই মন কোনরকমভাবেই উদ্বেলিত হয়নি। যেন সব কিছুই সম্ভব আজকের এই সময়ে! আর কেমন সমাপতন দেখুন, যেইদিন অফিসিয়ালি নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনিত করা হল তাঁকে একটি দেশের তরফে, সেই দিনই তিনি এক্কেবারে তিন তিনটি পরমাণু কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে দিলেন ইরানকে জব্দ করার জন্য। আহা শান্তির ধ্বজাধারীর কী মহিমা!
রবিবার ভোরে ইরানের ফোরডো, নাতান্জ় এবং ইসফাহান পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালায় আমেরিকার সামরিক বাহিনী। এই আক্রমণের বিরুদ্ধে স্বাভাবিকভাবেই সরব হয়েছে বিভিন্ন দেশ। ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকার এই আক্রমণের নিন্দা জানিয়েছে চিন। বেজিংয়ের দাবি, আকাশপথে ইরানের পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালিয়ে আন্তর্জাতিক আইন ভেঙেছে আমেরিকা! শুধু তা-ই নয়, আমেরিকা রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদেরও কোনও তোয়াক্কা করেনি বলে মনে করছে চিন। রবিবারের হামলা প্রসঙ্গে বিবৃতি প্রকাশ করে এমনটাই জানিয়েছে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বিদেশ মন্ত্রক। ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকার সামরিক আক্রমণের ইতিমধ্যেই নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়াও। ইরানের পরমাণুকেন্দ্রকে লক্ষ্য করে আমেরিকার হামলাকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে মন্তব্য করেছে রাশিয়া। মস্কোও জানিয়েছে, যে ভাবে আমেরিকা হামলা চালিয়েছে, তাতে আন্তর্জাতিক আইনকে সম্পূর্ণ ভাবে লঙ্ঘন করেছে তারা। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস রবিবার ইরানের তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছেন। সৌদি আরব ইরানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে "গভীর উদ্বেগ" প্রকাশ করেছে। অন্যদিকে, ওমান- যেখানে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে আলোচনা হয়েছে, এই হামলার নিন্দা জানিয়ে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছে। ইরান ঘিরে উত্তেজনা বৃদ্ধির নিন্দা জানিয়েছে মিশর। ইরাকও ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছে, শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচিকে লক্ষ্যবস্তু কররার মাধ্যমে বিপজ্জনকভাবে উত্তেজনা বৃদ্ধি ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি হচ্ছে। উত্তেজনা প্রশমনে দ্রুত কূটনৈতিক আলোচনার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে ইরাক। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ''বর্তমান বিপজ্জনক উত্তেজনা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিকভাবে বিপর্যয়কর পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যেতে পারে।'' লেবাননের প্রধানমন্ত্রী জোসেফ আউন বলেছেন, ''ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা উত্তেজনা আরো বাড়িয়ে দিতে পারে, যার ফলে আঞ্চলিক ও একাধিক দেশের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে।'' লাতিন আমেরিকায়, চিলি, বলিভিয়া, ভেনেজুয়েলা এবং কিউবার রাষ্ট্রপ্রধানরা যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছেন। তবে ব্রিটেন এবং ফ্রান্স জানিয়েছে, তারা এই হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল না। তবে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সুরেই সুর মিলিয়ে তারা জানিয়েছে, ইরান কোনও ভাবেই পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে পারবে না। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রবিবার দুপুর ৩টে নাগাদ সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে মোদী জানিয়েছেন, ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। ফোন কথোপকথনে পশ্চিম এশিয়ার সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করেছেন মোদী। একই সঙ্গে ইরানের প্রেসিডেন্টকে উত্তেজনা প্রশমনেরও আর্জি জানিয়েছেন।
এদিকে আমেরিকার হামলার পরে প্রত্যাঘাতের হুঁশিয়ারি দিল ইরানের রেভলিউশনারি গার্ড। সংবাদমাধ্যম ‘তেহরান টাইম্স’ অনুসারে, বিবৃতি প্রকাশ করে তারা জানিয়েছে, হামলাকারীদের (আমেরিকার) এর থেকে পালানোর কোনও পথ নেই। রেভলিউশনারি গার্ডের দাবি, তেহরানের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। হামলাকারীদের এমন জবাবের জন্য তৈরি থাকতে হবে, যার জন্য তারা অনুশোচনায় ভুগবে। ইরানের রেভলিউশনারি গার্ডকে উদ্ধৃত করে ‘আল জাজ়িরা’ জানিয়েছে, নির্দিষ্ট জায়গায় নিজেদের অত্যাধুনিক ‘খাইবার শেকান’ ক্ষেপণাস্ত্রকে মোতায়েন করছে তেহরান। এই ক্ষেপণাস্ত্র আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা (এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম)-র নজর এড়িয়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম বলে দাবি ইরানের।
উল্লেখ্য, আমেরিকা, ব্রিটেন-সহ বিভিন্ন পশ্চিমি দেশ স্পষ্ট করে দিয়েছে, ইরান কোনও ভাবেই পরমাণু বোমা তৈরি করতে পারবে না। যদিও ইরানের দাবি, তারা শান্তিপূর্ণ কাজের উদ্দেশ্যেই পরমাণু গবেষণা চালাচ্ছে। রেভলিউশনারি গার্ড বিবৃতিতে জানিয়েছে, শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মকাণ্ডের জন্য ইরান প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এই ধরনের হামলা চালিয়ে ইরানের বৈজ্ঞানিক কর্মকাণ্ডকে দমিয়ে দেওয়া যাবে না বলেও জানিয়েছে তারা। প্রত্যাঘাতের অন্তত চারটি সম্ভাব্য পথ নিয়ে বিশ্ব জুড়ে চলছে চর্চা। কয়েক দশক ধরে ইরান তাদের সামরিক শক্তির বহর বৃদ্ধি করে চলেছে। বহুস্তরীয় সামরিক জাল বুনছে তেহরান। মনে করা হচ্ছে, সেই সামরিক শক্তি দিয়ে পুরোদমে হামলার প্রস্তুতি নিতে পারে ইরান। তবে সেই হামলা পশ্চিম এশিয়ায় থাকা মার্কিন ঘাঁটিতে হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। শুধু তা-ই নয়, বিশ্বব্যাপী তেল সরবরাহের পথে বড় বাধার সৃষ্টি করতে পারে ইরান। পাশাপাশি, পরমাণু কর্মসূচি আবার চালু করার কথা ভাবতে পারে তারা। উল্লেখ্য, ২০০৩ সাল থেকে তা বন্ধ রয়েছে বলে দাবি ইরানের।
ইরান বর্তমানে স্নায়ুর যুদ্ধে এগিয়ে রয়েছে, তা যে কেউ স্বীকার করবে। যেভাবে ওই দেশে আঘাত হানা হচ্ছে, যেভাবে সমানে আমেরিকা হুমকি দিয়ে যাচ্ছে এবং শেষমেশ যেভাবে পরমাণু কেন্দ্রে আঘাত হানা হল আমেরিকার তরফে তাতে ইরান ভয় পেয়ে নতি স্বীকার করে নিলে আশ্চর্যের কিছুই ছিলনা। কিন্তু তারা তা করছেনা। বুক চিতিয়ে লড়ে যাচ্ছে, জবাব দিচ্ছে একের পর এক হামলার। ক্ষত- বিক্ষত হয়েও মাথা উঁচু করে রয়েছে, যা অবশ্যই সাবাশি দেওয়ার যোগ্য। ইসরায়েল ও ইরান বছরের পর বছর ধরে রক্তক্ষয়ী দ্বন্দ্বে লিপ্ত। আর এর তীব্রতা জিও পলিটিক্যাল বিষয়ের উপর নির্ভর করে কখনো বাড়ে, কখনো কমে। মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতার অন্যতম একটি কারণ এটি। ইরানের কাছে ইসরায়েল হলো ‘ছোট শয়তান’ ও মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র, যাকে তারা ডাকে ‘বড় শয়তান’ বলে। উল্টোদিকে ইসরায়েলের অভিযোগ ইরান ‘সন্ত্রাসী’ গোষ্ঠীকে অর্থায়নের পাশাপাশি ইহুদি বিরোধিতাকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে তাদের বিরুদ্ধে হামলা চালায়। ‘দুই প্রধান শত্রুর’ মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে বিপুল সংখ্যক হতাহতের ঘটনা ঘটলেও প্রায়শই তা গোপনে হওয়ায় কোনো সরকারই এর দায় স্বীকার করে না।
ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যকার সম্পর্ক ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত বেশ সৌহার্দ্যপূর্ণ ছিল। কিন্তু এই সম্পর্ক খারাপ হয় যখন আয়াতুল্লাহ ইসলামি বিপ্লবের মাধ্যমে তেহরানের ক্ষমতা দখল করে। এক সময়ে ইরান ছিল পাহলভি রাজবংশের শাহদের দ্বারা শাসিত একটি রাজতন্ত্র ও মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান মিত্র। ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম সরকারপ্রধান ডেভিড বেন-গুরিয়ন ইরানের সঙ্গে বন্ধুত্বের আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং তা অর্জনও করেন। কিন্তু ১৯৭৯ সালে পরিস্থিতি পুরোপুরি বদলে যায়। এই নতুন সরকারের পরিচয়ের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র ইসরায়েলের ‘সাম্রাজ্যবাদ’কে প্রত্যাখ্যান করা। নতুন আয়াতুল্লাহ সরকার ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে, ইসরায়েলের নাগরিকদের পাসপোর্টের বৈধতা অস্বীকার করে ও তেহরানে ইসরায়েলি দূতাবাস দখল করে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) কাছে হস্তান্তর করে। ইসরায়েলের প্রতি শত্রুতা ছিল নতুন ইরানি শাসনের একটি স্তম্ভ। নতুন ইরান নিজেকে প্যান-ইসলামিক শক্তি হিসেবে উপস্থাপন করতে চেয়েছিল। তবে ইসরায়েলের দিক থেকে ইরানের প্রতি শত্রুতা ১৯৯০ এর দশকের আগ পর্যন্ত শুরু হয়নি। কারণ তার আগে সাদ্দাম হোসেনের ইরাক বৃহত্তর আঞ্চলিক হুমকি হিসেবে বিবেচিত ছিল। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে ইসরায়েল ইরানকে তার অস্তিত্বের জন্য অন্যতম প্রধান হুমকি হিসেবে দেখতে শুরু করে এবং দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। সৌদি আরবের মতো অন্য বড় আঞ্চলিক শক্তির মুখোমুখি হওয়া এবং সুন্নি প্রধান আরব ইসলামিক বিশ্বে ইরানের শিয়া প্রধান হবার বাস্তবতার বিষয়ে সচেতন হয়ে ইরান সরকার তার বিচ্ছিন্নতা উপলব্ধি করে এবং শত্রুরা একদিন তাদের নিজের ভূখণ্ডে আক্রমণ করবে এমন শঙ্কা প্রতিরোধের লক্ষ্যে একটি কৌশল তৈরি করতে শুরু করে। এভাবেই তেহরানের সাথে যুক্ত সংগঠনগুলোর নেটওয়ার্ক প্রসারিত হয় এবং তার স্বার্থের জন্য অনুকূল সামরিক পদক্ষেপ চালায়। এদিকে ইসরায়েলও হাত গুটিয়ে বসে থাকেনি। বরং ইরান ও তার মিত্রদের আক্রমণ এবং অন্যান্য শত্রুতামূলক কাজের প্রতিরোধ করেছে। ইসরায়েলের জন্য ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ব্যর্থ করা সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যাতে করে আয়াতুল্লাহ কোনোভাবেই পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী না হয়। কেবল বেসামরিক উদ্দেশ্যে সেটি চালানো হচ্ছে– ইরানের এমন দাবি ইসরায়েল কখনোই বিশ্বাস করেনি। এমনকি এই ধারণাও ব্যাপকভাবে স্বীকৃত যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় ইসরায়েল স্টাক্সনেট কম্পিউটার ভাইরাস তৈরি করে, যা দুই হাজার সালের প্রথম দশকে ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোর গুরুতর ক্ষতি করেছিল। ইসরায়েল সরকার অবশ্য কখনোই ইরানি বিজ্ঞানীদের মৃত্যুর সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেনি। অপরদিকে ইসরায়েল তার পশ্চিমি মিত্রদের সাথে মিলে অতীতে তার ভূখণ্ডে ড্রোন এবং রকেট হামলার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি সাইবার হামলার ঘটনায় ইরানকে অভিযুক্ত করেছে। ২০১১ সালে শুরু হওয়া সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ ছিল দুই দেশের দ্বন্দ্বের আরেকটি কারণ। মার্কিন গোয়েন্দা পোর্টাল স্ট্র্যাটফোর অনুযায়ী, বিভিন্ন সময়ে ইসরায়েল এবং ইরান উভয়ই সিরিয়ায় কর্মকাণ্ড চালিয়েছে যার উদ্দেশ্য অন্য পক্ষকে বড় আকারের আক্রমণ শুরু থেকে বিরত রাখা। ২০২১ সালে এই "ছায়া যুদ্ধ" সমুদ্রেও পৌঁছেছিল। সেই বছর ওমান উপসাগরে ইসরায়েলি জাহাজে হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করেছিল ইসরায়েল। অন্যদিকে লোহিত সাগরে তাদের জাহাজে হামলার জন্য ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করে ইরান।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি মিলিশিয়া হামাসের আক্রমণ এবং এর প্রতিক্রিয়ায় গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরুর পর বিশ্বজুড়ে বিশ্লেষক এবং সরকারপ্রধানরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল যে এই সংঘাত অঞ্চলটিতে একটি চেইন প্রতিক্রিয়া তৈরি করে ইরানি এবং ইসরায়েলিদের মধ্যে উন্মুক্ত ও সরাসরি সংঘর্ষ উস্কে দিতে পারে। আশঙ্কা সত্যি করে গত সপ্তাহ পর্যন্ত ইরান এবং ইসরায়েল উভয়ই তাদের শত্রুতাকে বড় আকারের যুদ্ধে রূপ দেওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও তেহরানের ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের পর পরিস্থিতি বদলে যায়।



