৮/৯ ঘন্টার পথ মাত্র ৩৬ মিনিটে, রোপওয়েতে কেদারনাথ

৫ মার্চ, ২০২৫: পায়ে হেঁটে কষ্ট করে কেদারনাথ দর্শনের দিন শেষ হতে চলেছে। যদিও যাঁরা কৃচ্ছসাধন করতে চান, তাঁরা যেতেই পারেন, কিন্তু আরাম করে নান্দনিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে এবার থেকে রোপওয়েতেই পৌঁছে যেতে পারবেন কেদারনাথ। বুধবার জাতীয় রোপওয়ে উন্নয়ন কর্মসূচির অধীনে উত্তরাখণ্ডের সোনপ্রয়াগ থেকে কেদারনাথ পর্যন্ত রোপওয়ের অনুমোদন দেওয়া হল।
সোনপ্রয়াগ থেকে কেদারনাথ এবং গোবিন্দঘাট থেকে হেমকুন্ড সাহিব- উত্তরাখণ্ডে জোড়া রোপওয়ে প্রকল্পে অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। জাতীয় রোপওয়ে উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় উত্তরাখণ্ডের সোনপ্রয়াগ থেকে কেদারনাথ (১২.৯ কিমি) এবং গোবিন্দঘাট থেকে হেমকুণ্ড সাহেবজি (১২.৪ কিমি) পর্যন্ত রোপওয়ে প্রকল্প-পর্বতমালা প্রকল্পে সিলমোহর দেওয়া হল। ১২.৯ কিলোমিটার দীর্ঘ রোপওয়ে পথের অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। জানা গিয়েছে, কেদারনাথ পর্যন্ত রোপওয়ে তৈরি করতে ৪ হাজার ৮১ কোটি টাকা খরচ হবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, এই রোপওয়ে তৈরি হয়ে গেলে ৮-৯ ঘণ্টার যাত্রাপথ মাত্র ৩৬ মিনিটে পার করা সম্ভব হবে। সোনপ্রয়াগ থেকে কেদারনাথ পর্যন্ত রোপওয়ের দৈর্ঘ্য হবে ১২.৯ কিলোমিটার। আর গোবিন্দঘাট থেকে হেমকুন্ড সাহিবের দৈর্ঘ্য মোটামুটি ১২.৪ কিমি হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী। তাঁর আশ্বাস, আগামী ছয় বছরের মধ্যে দুটি প্রকল্পই শেষ হয়ে যাবে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে সোনপ্রয়াগ থেকে কেদারনাথের রোপওয়েটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে তৈরি ও চালানো হবে। ন্যাশনাল হাইওয়েজ অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার অধীনস্থ ন্যাশনাল হাইওয়েজ লজিস্টিক ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের তত্ত্বাবধানে রোপওয়ে প্রকল্পের কাজ চলবে। সোনপ্রয়াগ, গৌরীকুণ্ড এবং কেদারনাথ- এই তিনটি জায়গায় রোপওয়ে দাঁড়াবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানিয়েছেন, এখন বছরে মাসদুয়েক কেদারনাথে যাওয়া যায়। রোপওয়ে চালু হয়ে গেলে সেটা ছয় মাস হয়ে যাবে।
আপাতত সোনপ্রয়াগ থেকে ২১ কিমি পথ পেরিয়ে কেদারনাথে পৌঁছাতে হয়। সোনপ্রয়াগ থেকে গৌরীকুণ্ড পর্যন্ত পাঁচ কিমি রাস্তা আছে। গৌরীকুণ্ড থেকে কেদারনাথ পর্যন্ত ১৬ কিমি ট্রেক করতে হয়। নয়া প্রকল্প অনুযায়ী, ওই পুরো রাস্তাটা রোপওয়ে করে যাওয়া যাবে। এই প্রকল্পে গোবিন্দঘাট থেকে হেমকুন্ড সাহিব পর্যন্ত রোপওয়ে প্রকল্পে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রোপওয়ের দুটি সেকশন আছে - গোবিন্দঘাট থেকে গাঙ্ঘারিয়া (১০.৫৫ কিমি) এবং গাঙ্ঘারিয়া থেকে হেমকুন্ড সাহিব (১.৮৫ কিমি)। তিনটি স্টেশন থাকবে - গোবিন্দঘাট, গাঙ্ঘারিয়া এবং হেমকুন্ড সাহিব। এটি হেমকুণ্ড সাহিবে আগত তীর্থযাত্রীদের এবং ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্সে আগত পর্যটকদের পৌঁছতে সুবিধা করে দেবে।রুদ্রপ্রয়াগে ভূপৃষ্ঠের ১১,৯৬৮ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত কেদারনাথ মন্দির। পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রতি ঘণ্টায় ১,৮০০ জন যাতায়াত করতে পারবেন। বিশেষ করে বয়স্ক তীর্থযাত্রীদের জন্য এই রোপওয়ে খুব সুবিধাজনক হবে। আরামে তারা কেদারনাথ দর্শন করতে পারবেন।
Comments