top of page

৩১ মে-এর মধ্যেই এসএসসি- র নতুন করে বিজ্ঞপ্তি জারি, চাকরিহারাদের কাছে তা মৃ্ত্যু পরোয়ানা- নতুন কোনও আইনি জটিলতা?




কলকাতা, ২৭ মে, ২০২৫: মঙ্গলবার সকালেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছিলেন, চাকরিহারাদের জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ’ ঘোষণা করতে চলেছেন তিনি। সেইমতো নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে ঘোষণা করলেন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে ৩১ মে-এর মধ্যেই নতুন করে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হচ্ছে। পাশাপাশি চলবে আইনি লড়াইও। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সঠিক সময়ে সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন জমা দিয়েছে রাজ্য সরকার। এখন সুপ্রিম কোর্টে গরমের ছুটি চলছে। জুনে কোর্ট খুললে রিভিউ পিটিশনের শুনানি হবে। তাতে যদি, চাকরিহারাদের নতুন করে পরীক্ষা না দেওয়ার কোনও নয়া নির্দেশ সুপ্রিম কোর্ট দেয়, তা হলে আর এই নোটিফিকেশন কার্যকর হবে না।

মমতা জানিয়েছেন, এই নির্দেশ না-মানলে তার ফল ভুগতে হতে পারে চাকরিহারা শিক্ষকদের। তিনি বলেন, '৩১ মে-র মধ্যে নোটিফিকেশন করতেই হবে। ৩০ মে বিজ্ঞাপন দেবো। তবে বার বার বলব রিভিউ অপশন হাতে আছে।’ অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন করতে পারবেন ১৬ জুন পর্যন্ত। অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনের শেষ দিন ১৪ জুলাই। রিভিউ হতে যদি বেশি সময় লাগে, তাই হাতে সময় রাখা হয়েছে। ১৫ নভেম্বর প্যানেল প্রকাশ। আমাদের বলা হয়েছে ডিসেম্বরের মধ্যে সবটা শেষ করতে। কাউন্সেলিং হবে ২০ নভেম্বর।

তিনি এ-ও জানিয়েছেন যে, কারও চাকরি কেড়ে নেওয়ার পক্ষপাতী নয় তাঁর সরকার। চাকরিপ্রার্থীদের স্বার্থেই তিনি বিজ্ঞপ্তি জারি করতে চলেছেন। ২৪,২০৩ শূন্যপদের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। এই শূন্যপদ ছাড়াও অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করা হচ্ছে। ১১,৫১৭ অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি হয়েছে নবম-দশমের শিক্ষকদের জন্য। একাদশ-দ্বাদশের শিক্ষকের জন্য ৬,৯১২ অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করা হচ্ছে। গ্রুপ-সির জন্য অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি হচ্ছে ৫৭১টি। গ্রুপ ডির জন্য অতিরিক্ত এক হাজার পদ করা হচ্ছে। মোট শূন্য পদ ৪৪ হাজার ২০৩। নবম-দশম চাকরিহারাদের নিয়ে ২৩,২১২ শূন্যপদ। একাদশ-দ্বাদশ চাকরিহারাদের নিয়ে শূন্যপদ ১২,৫১৪। গ্রুপ সি ২৯৮৯, গ্রুপ ডি ৫,৪৮৮ শূন্যপদ। যে চাকরিহারাদের নিয়োগ পরীক্ষায় বসার বয়স পেরিয়ে গিয়েছেন, তাঁদের বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের বয়সের সীমায় ছাড় দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, ৩০ মে শিক্ষকদের জন্য নোটিফিকেশন জারি হবে। তার তিন-চার দিন পর গ্রুপ সি ও ডি-র নোটিফিকেশন জারি করা হবে। যাদের চাকরি চলে গিয়েছে, তাঁরা শিক্ষা দপ্তরের পাশাপাশি অন্য তিন চারটে দপ্তরেও চাকরি পাবেন। মমতা বলেন, ‘‘পরীক্ষায় বসুন। স্কুলে যাচ্ছেন, যান। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ডিসেম্বর পর্যন্ত মাইনে পাবেন। যথাযথ জায়গায় মর্যাদার সঙ্গে ফিরে আসার জন্য নিজেদেরটা রক্ষা করুন। সুযোগ আসবে। সুযোগের সদ্ব্যবহার করুন।

মমতা জানান, যাঁদের টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে, চাকরি বাতিল করা হয়েছে, বলা হয়েছে চাকরির পরীক্ষায় বসতে পারবেন না, কোর্ট বলেছে তাঁরা অন্য বিভাগে যোগ দিতে পারেন। শিক্ষা বিভাগে লোক প্রয়োজন। ঘর পরিষ্কার, ঘণ্টা বাজানোর লোক নেই, তালাবন্ধ করার লোক নেই।

চাকরি ফিরে পেতে ফের পরীক্ষায় বসা তাঁদের কাছে মৃ্ত্যু পরোয়ানার মতো৷ মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের ঘোষণার পর এমনই বলছেন চাকরিহারা শিক্ষকরা৷ স্কুলে ক্লাস করিয়ে, সংসার সামলে সাত বছর পর আবার নতুন করে পরীক্ষায় পাশ করার জন্য প্রস্তুতি কী ভাবে সম্ভব, এই প্রশ্ন চাকরিহারাদের প্রায় সকলেরই।

এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর মঙ্গলবারের ঘোষণা ২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষায় চাকরি পাওয়া এবং পরবর্তীতে চাকরি হারানোদের জন্য আরও বড় জটিলতার সৃষ্টি করবে বলে মনে করছেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, ‘‘উনি এই ঘোষণা করে আরও বড় জটিলতার মধ্যে ফেললেন। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, অযোগ্যদের চাকরি বাতিল করে তাঁদের থেকে টাকা ফেরত নিতে হবে। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সেটাও সমান্তরাল ভাবে করার কথা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী সে ব্যাপারে কিছু বলেননি।

এখন দেখার, যোগ্য প্রার্থীদের আন্দোলনের অভিমুখ কোন দিকে বইবে পাশাপাশি রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে নতুন কোনও আইনি জটিলতার সৃষ্টি হবে, কি না।

 
 
 

Commentaires

Noté 0 étoile sur 5.
Pas encore de note

Ajouter une note

Top Stories

প্রতিদিনের খবর এবং বিভিন্ন ফিচার ভিত্তিক লেখা, যেখানে খবরের সত্যতা তথা লেখনীর উৎকৃষ্টতা প্রাধান্য পায়। ফিচার ছাড়াও যে কোনও রকম লেখনী শুধুমাত্র উৎকৃষ্টতার নিরিখে গুরুত্ব পাবে এই সাইটে

Thanks for subscribing!

  • Whatsapp
  • Youtube
  • Instagram
  • Facebook
  • Twitter

The Conveyor

bottom of page