হরিয়ানার শম্ভুতে কৃষক আন্দোলনের মিছিলে ড্রোনের মাধ্যমে কাঁদানে গ্যাসের শেল

১৩ ফেব্রুয়ারি: দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন জারি রাখার নানা রকম প্রস্তুতি নিয়েই রাজধানীর দিকে অগ্রসর হচ্ছেন হাজার হাজার কৃষক। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে দিল্লির সীমানা। কৃষকদের এই ‘দিল্লি চলো’ অভিযান রোখার জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রচেষ্টা চালিয়েছে কেন্দ্র।
সোমবার রাত ১১টার পর বৈঠকে বসে ২০২০ সালের ইলেক্ট্রিসিটি আইন বাতিল করার বিষয়ে কৃষক নেতাদের আশ্বস্ত করেন দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরির ঘটনায় কৃষকদের বিরুদ্ধে রুজু হওয়া মামলা প্রত্যাহার করা হবে বলেও জানানো হয়। কিন্তু কৃষকদের মূল তিনটি দাবি— ফসলের ন্যায্য সহায়ক মূল্য, কৃষিঋণ মকুব এবং স্বামীনাথন কমিশনের প্রস্তাবের রূপায়ণ নিয়ে দু’পক্ষ কোনও স্থির সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি।

আজ পঞ্জাবের ফতেগড় সাহিব থেকে শুরু হয়েছে প্রতিবাদী কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’ অভিযান। মিছিলের অগ্রভাগেই রয়েছে কালো ত্রিপলে ঢাকা অজস্র ট্রাক্টর। কৃষকদের দু’টি বড় সংগঠন সংযুক্ত কিসান মোর্চা এবং কিসান মজদুর মোর্চা গত ডিসেম্বরেই দাবি আদায়ে ‘দিল্লি চলো’ অভিযানের ডাক দেয়। ১৫০০ ট্র্যাক্টর, ৫০০ গাড়িতে ছ’মাসের খাবার ভরে দিল্লি অভিযান শুরু করেছে কৃষকেরা। তবে হরিয়ানায় পৌঁছতেই মিছিল পরিণত হয়েছে রণক্ষেত্রে। আন্দোলনরত কৃষকদের দিল্লিতে প্রবেশ করা থেকে রুখতে রাস্তায় কংক্ৰিটের ব্যারিকেড তৈরি করেছে পুলিশ। আর এরই মাঝে কৃষকরা পঞ্জাব-হরিয়ানা শম্ভু সীমানায় পৌঁছলে ড্রোনে করে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় হরিয়ানা পুলিশ। কিষাণ মজদুর মোর্চার কোঅর্ডিনেটর সারওয়ান সিং পান্ধের এক ভিডিয়ো বার্তায় বলেন, 'কৃতৃপক্ষ বা প্রশাসনের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধাতে চাইছি না আমরা। আমরা এটাও বলছি না যে আমরা রাস্তা অবরোধ করব। সরকার নিজেরাই বিগত ২-৩ দিন ধরে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে।'
উল্লেখ্য, হরিয়ানা সরকার তড়িঘড়ি দু’টি বড় স্টেডিয়ামে অস্থায়ী জেল তৈরি করেছে। কৃষকেরা মিছিল নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সময় কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হলে তাঁদের আটক করে ওই দু’টি জেলে রাখা হবে বলে সূত্রের খবর। কৃষকদের কর্মসূচির আগে দিল্লিতে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। এক মাস অর্থাৎ, ১২ মার্চ পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকবে রাজধানীতে। ইতিমধ্যেই বন্ধ করা হয়েছে লালকেল্লা এবং দিল্লির দু’টি মেট্রো স্টেশন। অধিকাংশ গাড়িকে বিকল্প পথে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে মঙ্গলবার সকাল থেকেই যানজট শুরু হয় দিল্লির গাজিপুর এবং চিল্লা সীমানায়। দিল্লি থেকে হরিয়ানার মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী ৪৮ নম্বর জাতীয় সড়কে যানজট শুরু হয়েছে।
Comments