সুপার নিউমারিক পোস্ট তৈরির সিবিআই তদন্তের নির্দেশে স্থগিতাদেশ। পরবর্তী শুনানি আগামী সোমবার
২৯ এপ্রিল, ২০২৪: হাই কোর্টের সুপার নিউমারিক পোস্ট তৈরির জন্য সিবিআই তদন্তের নির্দেশে আজ স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। তবে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ গোটা বিষয়টিকে সম্পূর্ণ জালিয়াতি বলেই মনে করছে। প্যানেল বহির্ভূত চাকরিকে সম্পূর্ণ জালিয়াতি বলে মন্তব্য করে রাজ্যের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন তুলেছেন, যোগ্য-অযোগ্যদের বাছাই করা হবে কী উপায়ে? আদৌ কী তা সম্ভব? আর যোগ্য-অযোগ্যদের বাছাই করতে গিয়ে কোনও ভুল হবে না, তারই বা কী নিশ্চয়তা? শুনানিতে প্রশ্ন তোলা হল, কীভাবে এবং কেন তৈরি করা হল সুপার নিউমেরারি পোস্ট বা অতিরিক্ত শূন্যপদ?
উল্লেখ্য, কলকাতা হাই কোর্টের রায়ে বাংলার প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়েছে। সেই রায়ে সুপার নিউমারিক পোস্ট তৈরির জন্য সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি পর্যবেক্ষণে এও বলা হয়েছিল, প্রয়োজনে যে কাউকে সিবিআই ডাকতে পারে। অভিযোগ ছিল, অযোগ্যদের চাকরি দেওয়ার জন্য বাড়তি পদ তৈরি করা হয়েছিল এসএসসিতে। সেই পদ তৈরির অনুমোদন দিয়েছিল রাজ্যের মন্ত্রিসভা। সিবিআই চাইলে মন্ত্রিসভার সদস্যদেরও হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। রাজ্যের আইনজীবী শীর্ষ আদালতে সওয়াল করেন, এই সময় নির্বাচন চলছে। এখন সিবিআই তদন্ত করলে তো পুরো মন্ত্রিসভা জেলে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমন নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট, যা কার্যকর করা সম্ভব নয়। ওই রায়ের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেওয়া হোক। এর পরেই সুপার নিউমেরিক পোস্ট তৈরি নিয়ে মন্ত্রিসভার সদস্যের বিরুদ্ধে তদন্তে স্থগিতাদেশ দেয় শীর্ষ আদালত।
পাশাপাশি কলকাতা হাই কোর্টের চাকরি বাতিলের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে এসএসসি এবং রাজ্য সরকার। এই আবহে আজ চাকরি বাতিলের রায়ে স্থগিতাদেশ দিতে অস্বীকার করে শীর্ষ আদালত। ওএমআর শিট নষ্ট হয়ে যাওয়া, মিরর ইমেজ না থাকা, প্যানেলের বাইরে নিয়োগ— এ সব কী করে ঘটল, তা রাজ্যের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধান বিচারপতি। সোমবার শীর্ষ আদালতে চাকরিহারাদের আইনজীবী মুকুল রোহতগি চাকরি বাতিলের নির্দেশেও স্থগিতাদেশের আবেদন করেন। তিনি বলেন, ‘‘চাকরি বাতিল নিয়েও অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেওয়া হোক। ইতিমধ্যে ভোটের কাজে অনেকে চলে গিয়েছেন। এই অবস্থায় ফিরে আসা সম্ভব নয়।’’ কিন্তু প্রধান বিচারপতি তাতে স্থগিতাদেশ দেননি। তিনি বলেন, ‘‘আমরা শুধু মন্ত্রিসভা নিয়ে নির্দেশ দিচ্ছি।" সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী সোমবার।
এদিকে যোগ্যদের সসম্মানে বিদ্যালয়ে পুনর্বহাল, যোগ্য বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীদের স্বচ্ছভাবে দ্রুত নিয়োগ, এসএসসি, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও রাজ্য সরকারের পরিকল্পিত দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি, শিশুদের শিক্ষার অধিকার লঙ্ঘন করে সরকারি শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করার চক্রান্তের বিরুদ্ধে আজ সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিলে পা মেলান চাকরিহারা শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীসহ শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিরা। মিছিল শেষে মুখ্যসচিবের উদ্দেশ্যে ডেপুটেশন দেওয়া হয়। পাশাপাশি এসএসসি চেয়ারম্যান এবং পর্ষদ সভাপতির কাছে চিঠি লিখেও সমস্যার সমাধান করতে পদক্ষেপ নেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে।
Comments