সরকারি তরফে জানানো হল গতকাল রাতে মহাকুম্ভস্নান করতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু ৩০ জনের, জখম ৯০ জন

২৯ জানুয়ারি, ২০২৫: মহাকুম্ভর ডিজি বৈভব কুমার সরকারিভাবে জানিয়ে দিলেন, গতকাল রাতে কুম্ভস্নান করতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৩০ জনের। জখম হয়েছেন ৯০ জন। মৃত ৩০ জনের মধ্যে ২৫ জনকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। বাকিদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি বলে জানিয়েছেন ডিজি বৈভব কুমার। ঘটনার পরই র্যাফ নামিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে প্রশাসন। অমৃত স্নান বেশ কিছু সময়ের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। আহতদের ভর্তি করা হয় মেলা প্রাঙ্গনের হাসপাতালেই। পরে অবশ্য অমৃত স্নান পুনরায় শুরু হয়।
প্রায় ১২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিভিন্ন ঘাটে জড়ো হন লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীরা। মধ্যরাতে স্নানের সময় কোনও কারণে তাদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। কয়েকটি ব্যারিকেড ভেঙে যায়। ভিড়ের জটে বন্ধ হয়ে যায় রাস্তা। তার পরেই ছোটছুটি শুরু হয়ে যায় পুণ্যার্থীদের মধ্যে। অমৃত স্নানের পর পুণ্য়ার্থীরা কোথায় যাবেন, সেই বিষয়ে কোনও স্পষ্ট নির্দেশ ছিল না। যা বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল। যে পথ দিয়ে তাঁরা গিয়েছিলেন সঙ্গম এ, সেই পথ দিয়েই ফেরার চেষ্টা করেন। ওই একই সময়ে, একই রাস্তা দিয়ে অমৃত স্নান করতে আসছিলেন আরও হাজার-হাজার পুণ্যার্থী। ফলে দেখা দেয় বিশৃঙ্খলা।
বিবেক মিশ্র নামে স্থানীয় এক সোশ্যাল মিডিয়া কন্টেন্ট নির্মাতা জানিয়েছেন, স্নানের পর এই হাজার হাজার মানুষ কোন পথ দিয়ে ফিরবেন, কোথায় যাবেন তা বুঝে উঠতে পারেননি। তাঁদের সঙ্গে ভারী ভারী মালপত্র ছিল। মেলা প্রাঙ্গনে বড় বড় লোহার ডাস্টবিনও ছিল। ভোরের অন্ধকারে সেগুলি চোখে পড়ছিল না। প্রসঙ্গত, মৌনী অমাবস্যাকে কুম্ভ মেলার অন্যতম শুভ দিন বলে মনে করা হয়। তাই, অন্যান্য দিনের তুলনায় এদিন অমৃত স্নান করার জন্য মানুষের ভিড় ছিল অনেক বেশি। তবে, স্নান করার পর, পুণ্য়ার্থীদের যদি অন্য কোনও পথ দিয়ে সেখান থেকে বের করে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হতো, সম্ভবত এই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।
যদিও মেলার বিশেষ কার্যনির্বাহী কর্তা আকাঙ্ক্ষা রানার দাবি, ‘সঙ্গমের পথে কিছু ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যান মানুষ। তাতেই পদপিষ্টের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, মৌনি অমাবস্যায় অমৃত স্নান করার জন্য বিপুল জনসমাগম হয়েছে। কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ কোটি মানুষের জনসমাগম হয়েছে। গতকালই মহাকুম্ভে সাড়ে ৫ কোটি মানুষ স্নান করেছেন। আজও সকালে সাড়ে ৩ কোটি মানুষ স্নান করেছেন। যোগী আদিত্যনাথ আগত পুণ্যার্থীদের অনুরোধ করেন যে তারা সকলে যেন ত্রিবেণী সঙ্গমে স্নান করতে না যান। তার বদলে অন্যান্য ঘাটে স্নান করার অনুরোধ করেন। কারোর গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ৪ বার ফোন করেছেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং রাজ্যপাল আনন্দীবেন প্যাটেলও কথা বলছেন।
Comments