সঞ্জয় রায়ের ফাঁসি চাননা, জানিয়ে দিলেন নির্যাতিতার বাবা- মা

কলকাতা, ২৭ জানুয়ারি, ২০২৫: আজ কলকাতা হাইকোর্টে আরজি কর মামলার শুনানিতে খুনি সঞ্জয় রায়ের ফাঁসির সাজা তাঁরা এখনই চাইছেন না বলে জানালেন নির্যাতিতার বাবা মা। এই সংক্রান্ত রাজ্যের আবেদন গ্রহণযোগ্য কি না, তা নিয়েও শুনানি হয়েছে বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চে। আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, এই মামলায় সঞ্জয় রায়ের প্রতিনিধিত্ব করবে লিগাল এইড।
সোমবার এই সংক্রান্ত শুনানিতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানান, সিআরপিসির (কোড অফ ক্রিমিনাল প্রসিডিওর) ৩৭৭ এবং ৩৭৮ ধারায় বলা আছে, তদন্তকারী সংস্থা ছাড়াও রাজ্য আবেদন করতে পারে। এ ক্ষেত্রে ‘এবং’ শব্দ যুক্ত করে রাজ্যকে সেই এক্তিয়ার দেওয়া হয়েছিল। সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়, আরজি কর মামলার কেস ডায়েরি-সহ সব নথি সিবিআইয়ের কাছে রয়েছে। রাজ্যের কাছে কোনও নথি নেই। এই মামলার বিচার প্রক্রিয়ায় রাজ্যের কোনও ভূমিকা ছিল না। শুধুমাত্র সিবিআইয়ের আইনজীবী সেখানে ছিলেন। হঠাৎ রাজ্য আগ্রহ দেখাচ্ছে। এই মামলায় তারা কোনও ভাবেই আদালতকে সাহায্য করতে পারবে না। তাছাড়া ভারতীয় ন্যায় সংহিতার নতুন আইনে সিআরপিসির ওই দুই ধারার প্রভাব নেই। ফলে এ ক্ষেত্রে ওই দুই ধারা প্রযোজ্য হয় না।
বিচারপতি দেবাংশু বসাক বলেন, ''বিএনএস এস (BNSS) ৪১৮ অনুয়ায়ী কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা যদি আপিল না করে, একমাত্র তখনই রাজ্য আপিল করতে পারে তদন্তের অগ্রগতির স্বার্থে।" এদিকে, আইনজীবী ইয়াশ জালানকে আইনজীবীকে নিয়োগ করতে চায়নি সঞ্জয় রায়। তাই তাকে ওকালতনামা দেওয়া হয়নি। আদালতে জানালেন পাবলিক প্রসিকিউটর দেবাশীষ রায়। অপরদিকে হাইকোর্টে লিগ্যাল সার্ভিসের পক্ষ থেকে ওকালতনামা নিয়ে সঞ্জয় রায়ের হয়ে আদালতে পেশ করলেন আইনজীবী কৌশিক গুপ্ত।
এদিন শুনানি শেষে নির্যাতিতার বাবা বলেন, আমরা আদালতকে জানিয়েছি, এই মামলায় কে কী আবেদন করেছে আমরা জানি না। আইন মেনে আমাদের কিছু জানানো হয়নি। আমরা সংবাদমাধ্যমের খবর দেখে আদালতে এসেছি। আমাদের দাবি প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হোক। আদালতের বাইরে নির্যাতিতার বাবা বলেন, আমরা চাই, একা সঞ্জয় নন, যাঁরা যাঁরা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাঁরা সবাই সামনে আসুন। সবাইকে চরম শাস্তি দেওয়া হোক। তাই এই মামলায় আমরা ওঁর সর্বোচ্চ শাস্তি চাইছি না।
উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রেখেছে আদালত।
Comentarios