top of page

শিরদাঁড়া সোজা রেখে আন্দোলনে অনড় থাকলেন জুনিয়ার ডাক্তারেরা

Writer's picture: The ConveyorThe Conveyor



কলকাতা, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪: আজ মঙ্গলবার করুণাময়ীতে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে বিপুল জমায়েত হয়। নিজেদের শিরদাঁড়া সোজা রেখে আন্দোলনে অনড় থাকলেন জুনিয়ার ডাক্তারেরা। সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিট নাগাদ আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের কাছে রাজ্য সরকারের পক্ষে একটি মেল পাঠানো হয়। সেই মেলে বলা হয়, নবান্নে এসে সরকারের শীর্ষস্থানীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি দল এসে দেখা করতে পারে। প্রতিনিধি দলে যে সর্বোচ্চ ১০ জন থাকতে পারবেন, মেলে লেখা ছিল সে কথাও। সরকারের তরফে ওই মেলটি পাঠিয়েছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় সেখানে অপেক্ষা করছিলেন। মেল পাঠানোর প্রায় ৮০ মিনিট অপেক্ষা করে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ বাড়ি ফিরে যান তিনি। অপরদিকে জুনিয়র ডাক্তাররা জানিয়েছেন, ওই মেলের ভাষা ‘অপমানজনক’। তাই তাঁরা নবান্নে যাননি। আন্দোলনকারীরা বলেন, ‘‘যাঁর (স্বাস্থ্য সচিব) বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনিই মেল করেছেন আমাদের। এটা অপমানজনক। আন্দোলনের স্পিরিট নষ্ট হচ্ছে। রাতভর স্বাস্থ্যভবনের সামনে অবস্থান করার প্রস্তুতি নিয়েই এসেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। অনির্দিষ্টকালের জন্য তাঁরা এই বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন বলে জানান।

মোট ছয় দফা দাবিতে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ভবন অভিযান শুরু করেন জুুনিয়র ডাক্তারেরা। ঝাঁটা হাতে স্লোগান দিতে দেখা যায় আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের। প্রতীকী মস্তিষ্ক হাতে নিয়ে মিছিলে হেঁটেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁদের বক্তব্য, রাজ্যের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে একের পর এক দুর্নীতি হয়ে গেলেও স্বাস্থ্য ভবনের তরফে এত দিন কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। স্বাস্থ্য ভবনের কর্তাদের ‘মস্তিষ্ক উপহার’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা, যাতে তাঁরা মাথা খাটিয়ে সিদ্ধান্ত নেন।

যে পাঁচ দফা দাবির কথা তুলেছেন জুনিয়ার ডাক্তাররা, সেগুলি হল— ১) আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত সমস্ত দোষীদের দ্রুত চিহ্নিত করা, অপরাধের উদ্দেশ্য সামনে আনা এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। ২) তথ্যপ্রমাণ লোপাটের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচার। ৩) সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে ‘ব্যর্থ প্রমাণিত’ কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েলের ইস্তফা। ৪) রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ, হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। ৫) রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভয়মুক্ত পরিবেশ গড়া এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ সুনিশ্চিত করা। পাঁচ দফা দাবির পাশাপাশি, রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্য অধিকর্তা (ডিএইচএস) এবং স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা (ডিএমই)-র ইস্তফাও চেয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা।

এদিকে মঙ্গলবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক ছিল নবান্নে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের জানিয়ে দেন, আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা বা আন্দোলন এবং চিকিৎসকদের কর্মবিরতি নিয়ে যা বলার তিনিই বলবেন, অন্য কেউ নয়। বৈঠকে ঠিক হয়, আগামী ১২ সেপ্টেম্বর সমস্ত মেডিক্যাল কলেজের অধক্ষ্য, এমএসভিপি, সিএমওএইচ, সমস্ত জেলাশাসক, এসপি, পুলিশ কমিশনারদের নিয়ে রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজ, হাসপাতালগুলিতে সুরক্ষা ব্যবস্থা সংক্রান্ত বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী।

অপরদিকে মঙ্গলবার এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে নির্দেশ জারি করে জানানো হল, এসএসকেএম হাসপাতালে আর কোনও কাজ করতে পারবেন না অভীক দে। অপারেশন থিয়েটার (ওটি), জরুরি বিভাগেও আর কোনও ডিউটি করতে পারবেন না তিনি। হস্টেলের ঘরও পাবেন না। সোমবার কলেজ কাউন্সিলের বৈঠক হয়। সেখানেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পাশাপাশি আরজি কর হাসপাতালের ৫১ জীন চিকিৎসককে আজ সাসপেন্ড করা হয়েছে। তার মধ্যে সিনিয়র, জুনিয়ার, ইন্টার্ন ডাক্তাররা রয়েছেন, প্রত্যেককেই রোজ হাসপাতালে হাজিরা দিতে হবে, সময় পর্যন্ত থাকতে হবে, কিন্তু কোনওরকম কাজ করার অনুমতি মিলবেনা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যাচ্ছে, ৫১ জনের মধ্যে ২০ জন হাউস স্টাফ, দু’জন সিনিয়র রেসিডেন্ট, একজন রিসার্চ সায়েন্টিস্ট এবং ১১ জন ইন্টার্ন। তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলবে।

コメント

5つ星のうち0と評価されています。
まだ評価がありません

評価を追加

Top Stories

bottom of page