লাদাখ থেকে প্রতীকী "প্রথম বিস্ফোরণ"- এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শিনকু লা টানেলের নির্মাণকাজ শুরু করলেন
২৬ জুলাই, ২০২৪: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুক্রবার লাদাখে শিনকু লা টানেলের নির্মাণকাজ প্রতীকী "প্রথম বিস্ফোরণ"- এর মাধ্যমে শুরু করলেন। উল্লেখ্য, লাদখে শিঙ্কু লা টানেল তৈরির জন্য পাহাড় কাটতে হবে। সেই নির্মাণকাজ শুরুর জন্যে পাহাড়ের গায়ে বিস্ফোরণ ঘটান মোদী। কারগিলের দ্রাস ওয়ার মেমোরিয়ালে শহিদ সেনাদের উদ্দেশে সম্মান জ্ঞাপন করতে গেছেন মোদী। সেখান থেকেই অনলাইনে শিনকু লা টানেলের কাজের সূচনা করেন তিনি।
শিনকু লা টানেল, চার বছরে সম্পূর্ণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে, এটি ১৫,৮০০ ফুট উচ্চতায় বিশ্বের সর্বোচ্চ টানেল হয়ে উঠবে, যা চীনের ১৫,৫৯০ ফুটের মিলা টানেলকে ছাড়িয়ে যাবে। টানেলটি নিম্মু-পদম-দারচা অক্ষের মাধ্যমে মানালি এবং লেহের মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে দেবে প্রায় ৬০ কিলোমিটার।
বর্তমানে, মানালি এবং লেহ এর মধ্যে দূরত্ব ৩৫৫ কিমি। একবার টানেলটি চালু হয়ে গেলে, এটি ২৯৫ কিলোমিটারে কমিয়ে আনা হবে, যা বর্তমান মানালি-লেহ এবং শ্রীনগর-লেহ পথের তুলনায় আরও দক্ষ রুট প্রদান করবে। ৪ কিমি লম্বা নিম্মু-পদাম-দারচা নির্মাণাধীন রাস্তাটি একটি বিকল্প প্রদান করবে যা কৌশলগতভাবে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। দ্রুত লাদাখের সীমান্তবর্তী এলাকায় সেনা বা সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে যাওয়া আরও সহজ হয়ে যাবে সেনার জন্যে।
পূর্ব লাদাখে ভারত ও চীনের মধ্যে চলমান সামরিক অচলাবস্থার মধ্যে শিনকু লা টানেলের উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ হয়েছে। যা এখন পঞ্চম বছরে প্রসারিত হয়েছে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে দৌলত বেগ ওল্ডি বিমানঘাঁটিকে যুক্ত করার বিকল্প রাস্তার কাজও প্রায় সম্পন্ন হতে চলেছে। এই বিআরও এবার শিনকু লা পাস দিয়ে এই টানেল তৈরি করবে।
গত তিন বছরের মধ্যেই বর্ডার রোড অর্গনাইজেশন চিন সীমান্তের কাছাকাছি অঞ্চলে ৩৩০টি প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করেছে। যা তৈরি করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৮৭৩৭ কোটি টাকা। এটি উল্লেখযোগ্যভাবে চীনের সাথে সীমান্তে কৌশলগত গতিশীলতা বাড়িয়েছে। অতিরিক্তভাবে, BRO নুব্রা উপত্যকার সাসোমাকে LAC-এর কাছে ভারতের উত্তরতম সামরিক ঘাঁটি দৌলত বেগ ওল্ডি (DBO) থেকে সংযোগকারী ১৩০কিলোমিটার রাস্তার কাজও শেষ করে এনেছে। এই প্রকল্পের লক্ষ্য হল বিদ্যমান দারবুক-শিওক-দৌলত বেগ ওল্ডি (DS-DBO) রোডের একটি বিকল্প রুট প্রদান করা, যা LAC এর কাছাকাছি চলে।
সীমান্ত পরিকাঠামো জোরদার করার প্রতি ভারতের ফোকাস প্রতিরক্ষা ব্যয় এবং কৌশলগত প্রকল্প বাস্তবায়নে যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৪- ২৫ অর্থবছরের জন্য BRO-এর মূলধন বরাদ্দের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬,৫০০ কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ৩০% বৃদ্ধি পেয়েছে। দুই বছর আগের তুলনায় ১৬০% বৃদ্ধিকে প্রতিফলিত করে। অর্থ তহবিলের এই বৃদ্ধি সীমান্ত পরিকাঠামো বাড়ানো এবং সামরিক অভিযানে সহায়তা করার জন্য সরকারের প্রতিশ্রুতিকেই মান্যতা দেয়।
তবুও পরিশেষে বলতেই হয়, এভাবে পাহাড় কেটে রাস্তা- টানেল তৈরি হলে অনেক সুবিধা হয়তো হবে, কিন্তু প্রকৃতি আবার কিভাবে তার রোষ প্রকাশ করবে তা অবশ্যই চিন্তার বিষয়।
Comments