রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগের ভিত্তিতে কলকাতায় তৃণমূল কংগ্রেসের ধিক্কার মিছিল
কলকাতা, ৩ মে: ভোটের গরমে, প্রকৃতির গরমে বাংলার মানুষের প্রাণ এমনিতেই ওষ্ঠাগত প্রায়। তার মধ্যে আবার এমন এক খবর বাংলার ভোটের গরম আবহাওয়াকে ঠিক যেন প্রকৃতির তাপপ্রবাহের মত আগ জ্বলন্ত পর্যায়ে নিয়ে পৌঁছে দিল। গতকাল রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন রাজভবনের এক অস্থায়ী মহিলা কর্মচারী। অশালীন ইঙ্গিতের অভিযোগ তুলে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। হেয়ার স্ট্রিট থানায় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে।
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে রাজপথে নিয়ে এসে তাঁর বিরুদ্ধে কলকাতা শহরে ধিক্কার মিছিলের আয়োজন করেছে তৃণমূল কংগ্রেসের মহিলা সংগঠন। রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে তৃণমূল মহিলা কংগ্রেস শুক্রবার মৌলালি থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত ধিক্কার মিছিল করবে।
উল্লেখ্য, এই ঘটনার পর সরাসরি রাজ্যপালকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। আর তাই বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে রাজভবনে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের প্রবেশে এবং পাশাপাশি পুলিশ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের কলকাতা, দার্জিলিং ও ব্যারাকপুরের রাজভবন প্রাঙ্গণে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ওই বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে যে, মন্ত্রীর কোনও অনুষ্ঠানে অংশও নেবেন না রাজ্যপাল বোস। মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কী পদক্ষেপ করা যায়, তা জানতে দেশের অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে পরামর্শও চেয়েছেন রাজ্যপাল। তবে পরিস্থিতি মোটেই রাজ্যপালের অনুকূলে নেই। সকলেই এমন আচরণে রাজ্যপালের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে রয়েছে।
অন্যান্য রাজ্যে এমন অভিযোগের নজির থাকলেও পশ্চিমবঙ্গে এর আগে এমন ঘটনার কথা কোনওদিন শোনা যায়নি। এরই মাঝে এই রাজভবনেই এসে গতকাল রাত কাটিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে তাঁকে এসব ষড়যন্ত্র বলে জানিয়েছেন রাজ্যপাল। রাজ্যপালের বক্তব্য শুনে তাঁর পাশে দাঁড়াতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলে সূত্রের খবর।
সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৬১ অনুসারে, রাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যপালদের বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি পদক্ষেপ করা যায় না। সাংবিধানিক রক্ষাকবচ রয়েছে রাজ্যপালের। বিশেষ সাংবিধানিক ক্ষমতার কারনে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তদন্তের এক্তিয়ার কি পুলিশের রয়েছে? এই বিষয়ে ডি জি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, 'যেহেতু এটা স্পর্শকাতর বিষয়, মহিলা এসেছিলেন, তিনি বিস্তারিতভাবে কথা বলেছেন, তাই আপাতত আমরা তদন্ত করছি। আমাদের যে আইন বিভাগ ও সাংবিধান বিশেষজ্ঞ আছেন, তাঁদের সঙ্গেও এই বিষয়ে আমরা কথা বলব।' প্রয়োজনে ওএসডি-র সঙ্গে কথা বলা হতে পারে বলে জানান ডি সি সেন্ট্রাল। আইন এবং সংবিধান অনুযায়ী কী কী পদক্ষেপ করা যায়, সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সেই আলোচনা করা হচ্ছে কলকাতা পুলিশের তরফে।
Comments