রাজ্যপাল নিযুক্ত উপাচার্যদের বেতন ও ভাতা বন্ধের নির্দেশ রাজ্য সরকারের
কলকাতা, ১৩ জুন: শিক্ষাক্ষেত্রে ফের সংঘাত রাজ্য- রাজ্যপালের মধ্যে। যাদবপুর, কল্যাণী সহ রাজ্যের ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। উপাচার্য নিয়োগকে 'বেআইনি' ঘোষণা করে আইনি পরামর্শ নেওয়ার কথা জানিয়েছিল রাজ্য। রাজ্যপাল যাঁদেরকে অস্থায়ী উপাচার্য পদে নিয়োগ করেছিলেন, তাঁদের কাছেই ব্রাত্য বসু আবেদন জানিয়েছিলেন যাতে এই দায়িত্ব তাঁরা প্রত্যাখ্যান করেন। তবে ব্রাত্য বসুর আবেদনে সাড়া দিয়ে কেবলমাত্র একজনই উপাচার্যের পদ গ্রহণ করেননি। বাকি সবাই রাজ্যপালের কথা মতো নিজেদের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। এবারে সেই ইস্যুতে কড়া মনোভাব নিল রাজ্য।
ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সব রেজিস্ট্রারের কাছে উচ্চশিক্ষা দফতরের তরফে সেই নির্দেশিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যপাল নিজে থেকে দু'দফায় রাজ্যের ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করেন। এভাবে উপাচার্য নিয়োগ করার পর শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছিলেন, তাঁর বা সরকারের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করে একতরফাভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করা হয়েছে। সূত্রের খবর, আইনি পরামর্শ নেওয়ার পরই এই পদক্ষেপের পথে হেঁটেছে সরকার।
উল্লেখ্য, জগদীপ ধনখড় থাকাকালীনও বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য ইস্যুতে রাজ্য বনাম রাজ্যপাল সংঘাত তুঙ্গে উঠেছিল। এই আবহে মুখ্যমন্ত্রীকেই রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদে নিয়োগ করার জন্য বিলের খসড়াও তৈরি করেছিল সরকার। যদিও প্রথমদিকে দায়িত্ব গ্রহণের পর উপাচার্য ইস্যুতে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তবে ধীরে ধীরে সুর-তাল কাটতে শুরু করে। উপাচার্য নিয়োগের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে বেশ কিছু নির্দেশও দিয়েছিল রাজভবন। উপাচার্যদের প্রত্যেক সপ্তাহে কাজের রিপোর্ট পাঠানোর পাশাপাশি কোনও খরচের আগে রাজভবনের অনুমতি নেওয়ার নির্দেশ দেন আচার্য তথা রাজ্যপাল। এমনকী উপাচার্যরা চাইলে যে কোনও সময় রাজ্যপালের সঙ্গে টেলিফোন মারফত যোগাযোগ করতে পারবেন বলেও জানানো হয়।
উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কাছে পাঠানো চিঠিতে জানানো হয়েছে, রাজ্যপালের এভাবে সরাসরি উপাচার্য নিয়োগের কোনও এক্তিয়ার নেই। সেটা করতে হয় উচ্চশিক্ষা দফতরের মাধ্যমে। সেই কারনেই উচ্চশিক্ষা দফতর ওই উপাচার্যদের বৈধ হিসেবে গণ্য করছেনা। তাই তাঁদের বরাদ্দ বেতন এবং ভাতাও মঞ্জুর করছেনা রাজ্য সরকার। এই পদ্ধতিতে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে মামলাও হয়েছে।
সাংবাদিক বৈঠকে এই বিষয়ে ব্রাত্য বসু বলেন, 'কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকারে হস্তক্ষেপ করা কখনই সরকার মেনে নেবে না।' যদিও রাজভবনের তরফে এখনও এই নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
Comentarios