বুধবার সূচনা হল দু'দিন ব্যাপী বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের
- The Conveyor
- Feb 5
- 2 min read

কলকাতা, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫: বুধবার দুপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে সূচনা হল বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের। নিউ টাউনের বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে শুরু হল দু’দিনের সম্মেলন। ‘বেঙ্গল মিনস বিজনেস’-এই থিমকে সামনে রেখেই হচ্ছে এবারের শিল্প সম্মেলন।
বাংলায় শিল্পস্থাপনে সরকারি লালফিতের ফাঁস যে কেটেছে, তা গত কয়েক বছর ধরেই বলে আসছেন রাজ্য এবং রাজ্যের বাইরের শিল্পপতিরা। বাণিজ্য সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সস্ত্রীক উপস্থিত ছিলেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন, ভুটানের মন্ত্রী ইওন ক্যান পুনসো। শিল্পপতিদের মধ্যে ছিলেন মুকেশ অম্বানী, সঞ্জীব গোয়েঙ্কা, সঞ্জীব পুরী, সজ্জন জিন্দল, হর্ষ নেওটিয়া, হর্ষবর্ধন আগরওয়াল। ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও শিল্প সংস্থার হয়েই ছিলেন বাণিজ্য সম্মেলনে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে অষ্টম BGBS-এও হাজির মুকেশ আম্বানি। এ দিন মুকেশ আম্বানির ঝুলিতে ছিল একাধিক ঘোষণা। তিনি জানালেন, গত এক দশকে ২ হাজার কোটি টাকা থেকে বাংলায় রিলায়েন্সের বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা। আগামী দশকে তা আরও দ্বিগুণ হবে ও তৈরি হবে আরও এক লাখ চাকরির সুযোগ। বাংলার হস্তশিল্প ও বাংলার শাড়িকে বিশ্বের আরও কাছে পৌঁছে দিতে নয়া প্ল্যাটফর্মের ঘোষণা করলেন রিলায়েন্স কর্ণধার। তিনি জানান, শীঘ্রই লন্ডন, নিউইয়র্ক, প্যারিসে ‘স্বদেশ’ স্টোর খুলতে চলেছে রিলায়েন্স। সেখানে বাংলার জামদানি, বালুচরি, তাঁত, কাঁথা শাড়ি, মসলিন, বিষ্ণুপুরী সিল্ক, তসর সিল্ক,বিষ্ণুপুরী সিল্ক, তসর সিল্ক, মুর্শিদাবাদ সিল্ক এবং জুট ও খাদির পণ্য রাখা হবে। FMGC সেক্টরে শীঘ্রই স্টেক বাড়াতে চলেছে রিলায়েন্স। তারই ধাপ হিসেবে বাংলার বেশ কিছু খাদ্যপণ্য সংস্থার সঙ্গে পার্টনারশিপও করছে মুকেশ আম্বানির সংস্থা। সেই খাদ্যপণ্যও থাকবে 'স্বদেশ' স্টোরে।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়ে দিলেন, আগামিকাল, বৃহস্পতিবার থেকে দেউচা পাচামি প্রকল্পে কাজ শুরু হবে৷ একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন শিল্প সম্মেলনের মঞ্চ থেকেই ঘোষণা করেছেন, বাংলায় শিগগিরই ফের বড় বিনিয়োগ করবে টাটা গোষ্ঠী৷ টাটা গোষ্ঠীর এমডি-র সঙ্গেও তাঁর কথা হয়েছে৷ বাংলাকে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার গেটওয়ে বলে দাবি করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী দিনে বাংলা দেশের এক নম্বর শিল্প বিনিয়োগের জায়গা হবে। এমএসএমই থেকে মহিলা কর্মসংস্থা-ন সবেতে আমরা এক নম্বরে। বাংলায় দক্ষ শ্রমিক পাওয়া যায়। বিরোধীদের জবাব দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, "নথি দেখিয়ে বলছি, বাংলায় ১২ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। কোনও প্রকল্পের কাজ চলছে। কোনও প্রকল্পের কাজ শেষের মুখে"। আজ মমতা তাঁর বক্তৃতায় স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, পরবর্তী প্রজন্মের কর্মসংস্থানের জন্য বাংলায় বিনিয়োগ নিয়ে আসাই তাঁর অগ্রাধিকার। না-হলে পরবর্তী প্রজন্মকে রক্ষা করা যাবে না। মমতা বলেন, ‘‘কর্মসংস্থান ছাড়া পরবর্তী প্রজন্ম সার্ভাইভ করবে না।’’
বৃহস্পতিবার বিজিবিএসের সমাপ্তি। ওই দিন প্রথমার্ধে আলোচ্য বিষয়: ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প। দ্বিতীয়ার্ধে হবে সমাপ্তি অনুষ্ঠান। তবে সত্যিই যদি এরাজ্যে শিল্প বান্ধব পরিস্থিতি তৈরি হয়, তাহলে তো রাজ্যেরই মঙ্গল। রাজ্যের বেকার সমস্যা এখন অন্যতম ভয়াবহ একটি সমস্যা। এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার একমাত্র উপায় রাজ্যকে শিল্প বান্ধব করে গড়ে তোলা।
Comments