বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনেই ধুন্ধুমার, মার্শাল দিয়ে বিজেপির দুই বিধায়ককে ঘাড়ধাক্কা, একজনকে সাসপেন্ড

কলকাতা, ১০ মার্চ, ২০২৫: বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনেই ধুন্ধুমার কান্ড রাজ্য বিধানসভায়৷ মার্শালদের দিয়ে বিজেপির দুই বিধায়ককে বিধানসভার অধিবেশন থেকে বের করে দিলেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এদিন তুমুল হট্টগোলের মধ্যে মার্শাল দিয়ে বের করা হলো বিজেপি-র দুই বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ এবং মনোজ ওঁরাওকে। সাসপেন্ড করা হলো বিজেপি বিধায়ক দীপক বর্মনকে।
জানা গিয়েছে, বিধানসভা অধিবেশন চলাকালীন হিরণ চট্টোপাধ্যায় প্রশ্ন করেছিলেন, ‘কেন পাবলিক সার্ভিস কমিশনকে কাজের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না?’ অধ্যক্ষ তাঁকে নিজের এক্তিয়ার স্মরণ করিয়ে দেন। হিরণ তা মানেননি। তারপর তাঁর মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়। অধ্যক্ষের এই আচরণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা৷ স্লোগানিং শুরু করেন শঙ্কর ঘোষ, মণোজ ওঁরাওরা। তাঁদের বার বার চুপ করতে বলেন অধ্যক্ষ, কিন্তু স্লোগান দেওয়া থামেনি। বিক্ষোভ বাড়াবাড়ি পর্যায়ে গেলে বিজেপি বিধায়ক মনোজ ওরাওঁ এবং শঙ্কর ঘোষকে অধিবেশন কক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার জন্য মার্শালদের নির্দেশ দেন অধ্যক্ষ৷ এর প্রতিবাদে বাকি বিজেপি বিধায়করাও অধিবেশন কক্ষ ত্যাগ করেন৷ বেরিয়ে যাওয়ার সময় কাগজ ছিঁড়ে ওড়ানোর জন্য বিজেপি বিধায়ক দীপক বর্মনকে সাসপেন্ড করেন অধ্যক্ষ৷ চলতি অধিবেশনের জন্য তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে জানান অধ্যক্ষ৷এদিকে আগামী ১৮ তারিখ পর্যন্ত আগে থেকেই সাসপেন্ড হয়ে রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। ফলে উত্তপ্ত বিধানসভায় এ দিন প্রবেশের সুযোগ পাননি বিধানসভার বিরোধী দলনেতা।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শংকর ঘোষ বলেন, ‘মাঠে বিরোধী দলনেতাসহ বিরোধী প্লেয়ার থাকা চলবে না। তাই খালি মাঠে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাতে খেলতে পারেন তাই রেফারি ম্যানেজ করে বিরোধী দলনেতা আমিসহ অন্যদের সাসপেন্ড করা, মাইক বন্ধ করে দেওয়া, মার্শাল দিয়ে বার করে দেওয়া হচ্ছে। এরাজ্যে বিধানসভার বাইরের গণতন্ত্র ও ভিতরের গণতন্ত্রের একই অবস্থা। এরাজ্যে গণতন্ত্র হত্যা হচ্ছে। গুন্ডা, মার্শাল দিয়ে রাজ্য চালাতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’ অধ্যক্ষের এই সিদ্ধান্তের পাল্টা পদক্ষেপ কী হবে, তা ঠিক করতে শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বৈঠকে বসছে বিজেপি-র পরিষদীয় দল৷ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এ বিষয়ে বলেন, ‘উচ্চ মাধ্যমিকের পর বারুইপুরে সভা করে এই স্পিকারের মুখোশ খুলব। বাইরে যে গুন্ডামিটা তৃণমূলের গুন্ডাদের দিয়ে করাচ্ছেন, বিধানসভার ভিতরে সেটাই মার্শালদের দিয়ে করাচ্ছেন।’
পাল্টা তৃণমূল বিধায়কদের বক্তব্য, বিধানসভা অধিবেশনের প্রক্রিয়া বন্ধ করার চেষ্টা করছে বিজেপি। ফলে অধ্যক্ষ যে পদক্ষেপ নিয়েছেন তা যথাযথ। অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘অধ্যক্ষের ক্ষমতাই চূড়ান্ত। তাঁর আদেশ সবাইকে মেনে চলতে হবে। অপ্রাসঙ্গিক কথা বলা হয়েছে আজ এখানে। যা কোনও সদস্যের থেকে কাম্য নয়। তাই দীপক বর্মনকে সাসপেন্ড করা হল।’
Comments