ধনধান্য অডিটোরিয়াম বুকিং হওয়ার পরেও কোনও এক অজ্ঞাত কারনে ক্যান্সেল হয়ে গেল জুনিয়র ডাক্তারদের নাগরিক সম্মেলন
কলকাতা, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪: পুজোর মুখে নির্যাতিতার দাবিতে আরও কিছু কর্মসূচি পালন করার সিদ্ধান্ত নিল জুনিয়র ডাক্তারেরা। আসন্ন দেবীপক্ষের একেবারে সূচনা পর্ব থেকেই আর জি কর খুন ও ধর্ষণ কাণ্ডে নিগৃহীতার জন্য সুবিচার আদায়-সহ অন্যান্য একগুচ্ছ দাবিতে তাঁদের আন্দোলনকে সর্বাত্মক রূপ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। মঙ্গলবার জুনিয়র ডাক্তারদের জিবি মিটিং ছিল। সূত্রের খবর, সেখানেই দুই থেকে তিন দফা কর্মসূচির খসড়া প্রস্তুত করে ফেলেছেন তাঁরা।
আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর কলকাতার ধনধান্য স্টেডিয়ামে তাঁরা একটি নাগরিক সম্মেলনের ডাক দিয়েছেন। কিন্তু আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে বুধবার একটি সাংস্কৃতিক কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুললেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। পড়ুয়ারা বুধবার শহরের একটি মলে গিয়েছিলেন সাংস্কৃতিক কর্মসূচির জন্য। সেখান থেকে তাঁদের বার করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। ধনধান্য অডিটোরিয়ামেও একই আচরণ করা হয়েছে বলে দাবি করছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। ধনধান্য অডিটোরিয়ামের সাংস্কৃতিক কর্মসূচির জন্য মেয়র ফিরহাদ হাকিমের থেকে আশ্বাস পেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু এখন ধনধান্য অডিটোরিয়ামে ওই সাংস্কৃতিক কর্মসূচির অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না বলে দাবি জুনিয়র ডাক্তারদের। বুধবার কলকাতার ওই মলে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক কর্মসূচির জন্য আগাম অনুমতিও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, অভ্যন্তরীণ ‘নীতি’-র কারণ দেখিয়ে সেই কর্মসূচি করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। প্রতিবাদীদের একাংশ এতে রাজনীতির গন্ধও পাচ্ছেন। দুই জায়গা থেকেই তাঁদের প্রশ্ন করা হয়েছে, “আপনাদের প্রতিবাদ তো বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তা হলে এখনও কেন এই সব ভিত্তিহীন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন?” বুধবার বিকেলে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই কথা জানান, জুনিয়র ডাক্তারেরা। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এসএসকেএম হাসপাতালের অডিটোরিয়ামে ওই কর্মসূচি আয়োজিত হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
২৭ তারিখের গণ কনভেনশনেই আন্দোলনের পরবর্তী পর্যায় সম্পর্কে একটা স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এত দিন মূলত, রাজ্য সরকারকে নিশানা করে এই দাবি তোলা হলেও এবার তাতে কিছু বদল আসতে পারে। যার মূল দাবি— নির্যাতিতার বিচার। স্বাস্থ্যব্যবস্থা সংক্রান্ত আরও কিছু দাবি সামনে নিয়ে আসতে চাইছেন তাঁরা। যার মধ্যে অন্যতম, বাংলার স্বাস্থ্যক্ষেত্র থেকে ‘থ্রেট কালচার’ বা হুমকি সংস্কৃতি সমূলে উৎখাত করা। এবার কেন্দ্রীয় সরকার ও সিবিআই-এর প্রতিও আন্দোলনের অভিমুখ ঘোরানো হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষ যেভাবে তাঁদের আন্দোলনে সামিল হয়েছেন, এবার থেকে সেভাবেই আমজনতার বিভিন্ন দাবি পূরণে, তাঁদের বিভিন্ন আন্দোলনেও জুনিয়র চিকিৎসকরা অংশগ্রহণ করতে চাইছেন।
আরও একটি বিষয়কে সচেতন ভাবেই এড়িয়ে যেতে চাইছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তা হল ‘মুখ’। জুনিয়র ডাক্তারদের কেউই 'আন্দোলনের মুখ' হয়ে উঠতে চান না। বস্তুত, তাঁদের বক্তব্য হল - সমাজের সকলস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণেই এই আন্দোলন এক ঐতিহাসিক সর্বজনীন রূপ অর্জন করেছে।
Comments