দেশে লাগু হয়ে গেল ভারতীয় ন্যায় সংহিতা সহ নতুন তিন ফৌজদারি আইন
১ জুলাই, ২০২৪: আজ থেকেই লাগু হয়ে গেল ভারতীয় ন্যায় সংহিতা সহ নতুন তিন ফৌজদারি আইন। ১৮৬০ সালে তৈরি ‘ইন্ডিয়ান পেনাল কোড’ (ভারতীয় দণ্ডবিধি)-এর পরিবর্তে কার্যকর হয়েছে ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’। এর ফলে ব্রিটিশ আমলের তিনটি আইন বাতিল হয়ে গেল৷ আইপিসি ছাডা়ও কোড অফ ক্রিমিনাল প্রসিডিওর এবং ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট এই তালিকায় রয়েছে৷
‘ইন্ডিয়ান পেনাল কোড’ (ভারতীয় দণ্ডবিধি)-এর পরিবর্তে ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’, ১৮৯৮ সালের ‘ক্রিমিনাল প্রসিডিওর অ্যাক্ট’ (ফৌজদারি বিধি)-এর পরিবর্তে ‘ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা’ এবং ১৮৭২ সালের ‘ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট’ (ভারতীয় সাক্ষ্য আইন)-এর বদলে ‘ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম’— এই তিনটি নতুন ফৌজদারি আইন কার্যকর হয়েছে সোমবার থেকে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় মোট ৩৫৮টি ধারা রয়েছে। ন্যায় সংহিতায় ২০টি নতুন অপরাধ যুক্ত করা হয়েছে এবং নতুন ফৌজদারি আইনে ৩৩টি অপরাধের জন্য কারাদণ্ডের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে।
এবার থেকে অভিযুক্তরা জামিনের আবেদন করার জন্য সাত দিন সময় পাবেন। বিচারককে সেই সাত দিনে শুনানি করতে হবে এবং সর্বোচ্চ ১২০ দিনের মধ্যে মামলার ট্রায়াল শুরু করতে হবে। এখন যদি কেউ অপরাধের ৩০ দিনের মধ্যে তাদের অপরাধ স্বীকার করে তবে শাস্তি কম হবে। বিচারের সময় ৩০ দিনের মধ্যে সমস্ত নথি উপস্থাপন করতে হবে। এতে কোনও বিলম্ব করা যাবে না।
তবে নতুন আইনে কী কী অপরাধ এবং তার শাস্তি হিসাবে কী বলা হয়েছে, তা নিয়ে ধন্দে আছেন অনেকেই। নতুন তিন আইনের বিরুদ্ধে একাধিক আপত্তি তুলে ধরেছে বিরোধী দলগুলিও।
নতুন আইন অনুযায়ী ফৌজদারি আইনের আওতায় প্রথম এফআইআর দায়ের হল দিল্লির এক হকারের বিরুদ্ধে। প্রথম এফআইআরটি হয়েছে দিল্লির কমলা মার্কেট থানায়। এফআইআর অনুযায়ী, অভিযুক্তের নাম পঙ্কজ কুমার। তিনি বিহারের বারহের বাসিন্দা। তিনি নয়াদিল্লি রেলওয়ে স্টেশনের ফুট ওভার ব্রিজের নীচে ব্যবসা করেন। তাঁর বিরুদ্ধে রাস্তা আটকে ব্যবসা করার অভিযোগ উঠেছে ৷ রাস্তা ঘিরে ব্যবসা চালানোর জন্য তাঁর বিরুদ্ধে নতুন ফৌজদারি আইনের ২৮৫ ধারার অধীনে পুলিশ এফআইআর দায়ের করেছে বলে খবর। ২৮৫ ধারা অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তি যদি তাঁর দখলে থাকা সম্পত্তির মাধ্যমে অন্যের যাতায়াতের পথে বাধা সৃষ্টি করেন অথবা অন্য কোনও ব্যক্তির বিপদ, বাধা বা আঘাতের কারণ হন, তা হলে শাস্তিস্বরূপ তাঁকে জরিমানা দিতে হবে। যা সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। সেই ধারাতেই এফআইআর দায়ের হল দিল্লির ওই হকারের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ, কমলা মার্কেট এলাকায় মূল রাস্তার ধারে একটি ঠেলাগাড়িতে জল ও তামাক বিক্রি করছিল অভিযুক্ত। দিল্লি পুলিশের এক এসআই ‘ই-প্রমাণ অ্যাপ্লিকেশন’ ব্যবহার করে গোটা ঘটনার ভিডিয়ো ক্যামেরাবন্দি করেন। তার পরই এফআইআর দায়ের করেন। এফআইআরে বলা হয়েছে, টহলদারি আধিকারিকরা পঙ্কজ কুমারকে তাঁর ঠেলা গাড়ি সরাতে বলেছিলেন। তবে আধিকারিকদের নির্দেশ তিনি উপেক্ষা করেন। এরপরই এফআইআর দায়ের করা হয়।
Σχόλια