দু'ঘন্টা ধরে চলল জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক, তবে অনশন চলবে কি না তা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আলোচনা করেই
- The Conveyor
- Oct 21, 2024
- 2 min read

কলকাতা, ২১ অক্টোবর, ২০২৪: প্রথম থেকে লাইভ স্ট্রিমিং নিয়ে যে চাপান- উতোর চলছিল, তা আজ উধাও হয়ে গেল। সোমবার লাইভ স্ট্রিমিং করেই বৈঠকে বসলেন মুখ্যমন্ত্রী-জুনিয়র চিকিৎসকরা। সময়মতো জুনিয়র ডাক্তাররা নবান্নে পৌঁছে যাওয়ায় ১ মিনিট আগেই বৈঠক শুরু করতে চান মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমেই ডাক্তারদের শরীরের খোঁজ নেন তিনি। আজও ১০ জন জুনিয়র ডাক্তারকে ডাকা হলেও নবান্নে গিয়ে পৌঁছন ১৭ জন। যদিও তাঁদের সকলকেই বৈঠকে যোগ দিতে দেয় রাজ্য সরকার।
শুরুতেই বলতে হয়, সুচারু রাজনীতিকের পরিচয় দিয়ে আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যথেষ্ট সমবেদনার সঙ্গে পরিস্থিতি সামলেছেন। পুজো নিয়ে, কার্নিভাল নিয়ে যেভাবে মানুষ বিদ্রোহ করে উঠেছিল, আসন্ন নির্বাচনের সামনে দাঁড়িয়ে তার যোগ্য জবাব দিলেন তৃণমূল নেত্রী। এখানেই সবাইকে টপকে যান তিনি।
তবে শুরু থেকেই ঠান্ডা মাথায় চিকিৎসক পড়ুয়াদের বক্তব্য, যাবতীয় দাবি ও অভিযোগ মন দিয়ে শুনলেও আচমকাই মেজাজ হারান মমতা। প্রিন্সিপালদের বিভিন্ন কাজ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। কিন্তু ডক্টর অনিকেত মাহাতো সমানে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মত বিনিময় করে গেছেন। বোঝানোর চেষ্টা করেছেন কিভাবে বিভিন্ন বিষয়ে অরাজকতা চলেছে। ৪৭ জনকে সাসপেন্ড করা নিয়ে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত উষ্মাপ্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কার্যত সরাসরি সংঘাতে জড়ালেন অনিকেত মাহাতো। তিনি আরজি করের প্রিন্সিপালের হয়ে মুখ খোলেন, দাবি করেন, তদন্ত কমিটি খতিয়ে দেখে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, গাইডলাইন মেনেই ওদের সাসপেন্ড করা হয়েছিল। এই কথা শোনার পরে রাজ্য সরকারের তরফে অস্বস্তি আরও বাড়ে। এরপর কার্যত ধমক দিয়ে চুপ করানোর চেষ্টা করা হয়।
বৈঠকে আজ করোও বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে গেলেই মমতা বাধা দিয়েছেন। যারা উপস্থিত নেই, তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলা যাবেনা, বলেন তিনি। তবে কার্যত একেবারে পয়েন্ট ধরে ধরে জুনিয়র ডাক্তাররা তাঁদের বিষয়বস্তুগুলি তুলে ধরেন এদিন। কার্যত রাজ্য সরকার যখন একাধিক বিষয়কে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তখন পালটা জুনিয়র ডাক্তাররা টক্কর দেন। জানাতে থাকেন, কীভাবে মেডিক্যাল কলেজগুলিতে থ্রেট কালচার চলে। কীভাবে মেডিক্যাল কলেজে তোলাবাজি চলে। কীভাবে চলে চোখ রাঙানি। কীভাবে চলে দুর্নীতি।
মমতা বৈঠকে বলেন, “রেফারেল ও বেড মনিটরিং সিস্টেম নিয়ে আপনাদের মতামত আমাকে ই মেইল করে পাঠিয়ে দিন। এটাতে আমরা দেরি করতে চাই না। আপনাদের যোগদান একটা গুরুত্বপূর্ণ হবে এটায়।" মমতা ডাক্তারদের বলেন, ‘‘তোমাদেরও দায়বদ্ধতা আছে, বোনেদের দেখে রাখা। বোনেদের দায়িত্ব রয়েছে ভাইদের দেখে রাখা।’’ জেলায় জেলায় গ্রিভ্যান্স সেল হওয়া উচিত বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রায় দু'ঘন্টা পর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠক শেষ হলেও অনশন তোলা হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনায় বসেছেন ডাক্তারেরা। আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা।
Commenti