দক্ষিণবঙ্গে আপাতত বৃষ্টির কোনও পূর্বাভাস নেই
কলকাতা, ১৮ এপ্রিল: ২০২৪ সালের শুরু থেকেই গরমের দাবদাহে নাজেহাল হচ্ছে মানুষ। দহন থেকে এখনই মুক্তি নেই দক্ষিণবঙ্গের বাসিন্দাদের। আবহাওয়া দফতরের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল, চলতি সপ্তাহে গরম আরও বাড়বে। মার্চ এপ্রিল মাসের গরমে হিমসিম খেতে হচ্ছে আম জনতাকে। শুধু পশ্চিমবঙ্গেই নয়, একই অবস্থা ভারতের অন্যান্য রাজ্যগুলোরও। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, আসন্ন মে মাসেও গরমের দাপট নেহাতই কম হবে না।
বৃহস্পতিবার আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হল, শুক্রবার থেকে দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত জেলাতেই তাপপ্রবাহ চলবে। বিশেষ ভাবে সতর্ক করা হয়েছে আটটি জেলাকে। দুই মেদিনীপুর, দুই বর্ধমান, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া এবং বীরভূম এই আটটি জেলাকে ‘অতি তীব্র তাপপ্রবাহ’ নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। আগামী তিন দিন দক্ষিণবঙ্গে ৩ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে। তার পরের দিন তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে ৪ থেকে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া দফতর।
দক্ষিণবঙ্গে আপাতত বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই। বঙ্গোপসাগরের উপর থেকে উচ্চচাপ বলয় সরে যাওয়ায় গরম বাতাস হুহু করে গাঙ্গেয় বঙ্গে ঢুকছে। উল্লেখ্য, আবহবিদরা জানিয়েছিলেন, এল নিনোর প্রভাবে প্রচন্ড তাপে পুড়বে গোটা ভারত। ঘাটতি হবে বৃষ্টিতেও। ২০২৩ সাল থেকে চলা এল নিনোর প্রভাবেই এমন অবস্থা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহবিদরা।এটি সাধারণত প্রতি দুই থেকে সাত বছরে ঘটে এবং স্থায়ী হয় নয় থেকে বারো মাস। এল নিনো প্রভাবিত করে সারা বিশ্বের আবহওয়াকে। এটি জলবায়ুরএকটি প্যাটার্ন যা মধ্য ও পূর্ব প্রসান্ত মহাসাগরে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চ তাপমাত্রা দ্বারা চিহ্নিত।
এরই মাঝে কিছুটা হলেও স্বস্তির খবর শোনাল অস্ট্রেলিয়ার ব্যরো অফ মেটিওরোলজি বা বিওএম। তারা মঙ্গলবার জানিয়েছে, ফিরে আসবে লা নিনা। লা নিনার ক্ষেত্রে প্রশান্ত মহসাগরীয় অঞ্চলে পূর্ব থেকে পশ্চিমে বয়ে চলা বাযুর পরিবর্তন ঘটে। লা নিনা চলাকালীন সমুদ্রের গভীর থেকে উঠে ঠান্ডা জল সমুদ্রের উপরিভাগে উঠে যায়। কাজেই এল নিনো যেমন তীব্র তাপপ্রবাহের কারণ, তেমনি লা নিনা ঠিক এর উল্টোটা। তবে ভারতের আবহাোয়া বিভাগ আইএমডি জানিয়েছে, জুন- সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বর্ষার শেষার্ধে গড় বৃষ্টিপাত হতে পারে। অগাস্ট-সেপ্টেম্বর নাগাদ লা নিনার পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা।
তীব্র গরমের কারনে দার্জিলিং ও কালিম্পং বাদে রাজ্যের বাকি সব জেলায় এগিয়ে আনা হল স্কুলের ছুটি। ৬ই মে থেকে গরমের ছুটি দেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। সেই ছুটি দুই সপ্তাহ এগিয়ে আনা হল। এই আবহে ২২ এপ্রিল থেকেই রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলিতে গরমের ছুটি পড়বে। বেসরকারি স্কুলগুলিকেও ২২ তারিখ থেকে গরমের ছুটি দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে। কবে স্কুল খুলবে তা অবস্থা বুঝে পরর্বতীতে জানাবে রাজ্য সরকার।
Comments