ট্যাব কেলেঙ্কারিতে উঠে এল আরও তিন রাজ্যের যোগ
কলকাতা, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪: পশ্চিমবঙ্গের একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার টাকা ‘বেহাত’ হওয়া নিয়ে গোটা রাজ্য তোলপাড়। সিট গঠন করে তদন্ত শুরু করেছে কলকাতা ও মালদা পুলিশ। ১ হাজার ৯১১ জন পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা নিয়ে জালিয়াতি করেছে হ্যাকাররা। ট্যাবের টাকা গায়েব হয়েছে এই সংক্রান্ত অভিযোগের সংখ্যা ১৫০০ এরও বেশি। গোটা রাজ্য থেকে ১৫০০ এরও বেশি অভিযোগ স্কুল শিক্ষা দফতরে। এর মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৮০০ এর মতো অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে স্কুল শিক্ষা দফতর।
ট্যাবের টাকা ছাত্রছাত্রীদের অ্যাকাউন্টে যাওয়ার কথা। সেখানে অন্যদের অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে। হ্যাকাররা প্রকল্পের সাইট হ্যাক করে নিজেদের অ্যাকাউন্ট নম্বর লিখে দিয়েছে। তার ফলেই এই গরমিল হয়েছে বলে পুলিশের দাবি। ঘটনায় কি আন্তঃরাজ্য চক্রের যোগ রয়েছে, তদন্তে উঠে আসছে এমনই তথ্য। ধৃতদের জেরা করে এবং তাঁদের থেকে প্রাপ্ত নথি খতিয়ে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন আন্তঃরাজ্য অসাধু চক্র এই কাজের সঙ্গে জড়িয়ে থাকতে পারে। শুধু বাংলায় নয়, দেশের আরও তিন রাজ্যেও এই চক্র কাজ করেছে বলে অনুমান তদন্তকারীদের। সেই সব রাজ্যের বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করেছে এই চক্র। জেরায় ধৃতেরা স্বীকার করেছেন যে, তাঁরা মহারাষ্ট্র, রাজস্থান এবং ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের টাকাও সাইবার প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন। শুক্রবার ভবানী ভবন থেকে এমনই জানালেন এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার। দেশের আরও অন্য কোনও রাজ্যেও সরকারি প্রকল্পের টাকা এ ভাবে আত্মসাৎ হয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আপাতত, ‘জয়েন্ট ইনভেস্টিগেশন মনিটরিং টিম’ মহারাষ্ট্র, রাজস্থান এবং ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।
পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে শিক্ষা দফতরের তরফে এবার “অ্যাকাউন্ট ভ্যালিডেশন” করেই টাকা পাঠানো হবে, এমনই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ টাকা পাঠানোর আগে অ্যাকাউন্ট নম্বর ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নাম অ্যাকাউন্ট আছে কি না, তা যাচাই করা হবে। ব্যাঙ্ক এবং অর্থ দফতরের আধিকারিকরাই যাচাই করবেন। তারপরেই ট্রেজারির মাধ্যমে টাকা পাঠানো হবে।
উল্লেখ্য, ট্যাবের টাকা হাতানোর জন্য মঙ্গলবার প্রথমে এক জনকে, পরে চার জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ধৃত চার জনের সকলেই বৈষ্ণবনগরের বাসিন্দা। বুধবার ট্যাব-কাণ্ডে আরও এক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। একই অভিযোগে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া ও রামগঞ্জ থেকে ধরা পড়ে তিন জন। ধৃতদের প্রায় সকলেরই সাইবার ক্যাফে রয়েছে।
Comentários