জ্ঞানব্যাপী মন্দিরে ASI সমীক্ষা চালাতে পারবে, বৃহস্পতিবার জানিয়ে দিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট
৩ অগাস্ট: জ্ঞানব্যাপী মন্দিরে এএসআই(ASI) সমীক্ষা চালাতে পারবে। বৃহস্পতিবার এমনই জানিয়ে দিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার মামলার রায় দিতে গিয়ে এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি প্রীতঙ্কর দিওয়াকার বলেন, সমীক্ষার জন্য বারাণসী জেলা আদালতের নির্দেশ বৈধ। ন্যায়বিচারের স্বার্থে মসজিদের বৈজ্ঞানিক জরিপ প্রয়োজন।
এই নির্দেশের ফলে সমীক্ষার কাজে আর কোনও বাধা রইল না। উল্লেখ্য, আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (এএসআই)-কে মসজিদের সমীক্ষা করার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে মসজিদ কমিটি এলাহাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। জ্ঞানবাপী মসজিদটি বারাণসীর কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের পাশে অবস্থিত। মন্দির ভেঙে মসজিদটি তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ করে মামলা করে হিন্দু সংগঠন। হিন্দু সংগঠনের আবেদনের ভিত্তিতে গত জুলাই মাসে বারণসীর জেলা আদালত আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (এএসআই)-কে দিয়ে মসজিদের সমীক্ষার নির্দেশ দেয়।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের অগস্ট মাসে পাঁচ হিন্দু মহিলা জ্ঞানবাপী চত্ত্বরে দেবদেবীর অস্তিত্ব দাবি করে বারণসী জেলা আদালতে দ্বারস্থ হয়েছিল। সেই সঙ্গে তাঁরা পুজো-অর্চনার দাবি করেন। পুরো ব্যাপারটির গুরুত্ব বুঝে বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে সমীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয় এএসআই কে। বিতর্কিত ওয়াজুখানা এলাকা বাদ দিয়ে এই সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিল বারাণসী জেলা আদালত। তা বহাল রেখেছে ইলাহাবাদ হাই কোর্ট। গত ২৪ জুলাই ৩০ সদস্যের ASI দল রাডার ম্যাপিং সহ আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে জরিপ চালানোর জন্য জ্ঞানবাপী কমপ্লেক্সে প্রবেশ করে। কিন্তু সমীক্ষার সময় মসজিদের কাঠামো ক্ষতি হতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হয় মসজিদ কমিটি। পাশাপাশি মসজিদ কমিটি সমীক্ষার উপর স্থগিতাদেশ জারির আবেদন জানায়। শীর্ষ আদালত সমীক্ষায় স্থগিতাদেশ জারি করে এবং বারাণসীর রায়কে চ্যালেঞ্জ করে এলাহাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার জন্য মসজিদ কমিটিকে নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশ মেনে এলাহাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল কমিটি। এবারে ফের হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
এদিকে এএসআই বিশেষজ্ঞ দল আদালতকে জানিয়েছে, ‘গ্রাউন্ড পেনিট্রেটিং রাডার’-এর সাহায্যে খননের কাজ ছাড়াই সমীক্ষার কাজ চালানো যেতে পারে। তাতে ওই প্রাচীন কাঠামোর কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। হিন্দুপক্ষের তরফে প্রাপ্ত নমুনাগুলির কার্বন ডেটিং পরীক্ষার আবেদন জানানো হয়েছিল। ‘শিবলিঙ্গ’-এর বয়স নির্ধারণে কার্বন ডেটিং পদ্ধতির প্রয়োগ নিয়ে অবশ্য ধন্দ রয়েছে বিশেষজ্ঞদের একাংশের মধ্যে। তাঁরা জানাচ্ছেন, মৃত প্রাণী বা উদ্ভিদের দেহাংশ এবং জীবাশ্মের বয়স নির্ধারণে কার্যকরী হলেও এই পদ্ধতিতে কোনও প্রাচীন শিলা বা প্রস্তরখণ্ডের বয়স নির্ধারণ করা কঠিন।
Comments