চাকরি বাতিলের নির্দেশে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গেল স্কুল সার্ভিস কমিশন
কলকাতা, ২৪ এপ্রিল: এসএসসি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গেল স্কুল সার্ভিস কমিশন। সূত্রের খবর, বুধবার এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য। বুধবার এসএসসির তরফে হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করা হয়েছে। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের রায় বেরনোর পরই এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার জানিয়েছিলেন, তাঁদের কাছে ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বেআইনি পথে চাকরি পাওয়া পাঁচ হাজার জনের তথ্য ছিল৷ কিন্তু, তার জন্য বাকি ১৯ হাজার জনের চাকরি কেন বাতিল করার নির্দেশ দেওয়া হল? সেই প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি।
সোমবার স্কুল সার্ভিস কমিশনের অধীনে ২৫,৭৫৩টি চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। ২০১৬ সালে নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ এবং গ্রুপ সি ও ডিদের নিয়োগের প্রেক্ষিতে এই রায়। গত সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শাব্বার রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ এসএসসি মামলার রায়ে সব মিলিয়ে ২০১৬ সালে নিযুক্ত মোট ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি বাতিল করেছে। যাঁরা মেয়াদ-উত্তীর্ণ প্যানেলে চাকরি পেয়েছিলেন, যাঁরা সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। চার সপ্তাহের মধ্যে ১২ শতাংশ হারে সুদ-সহ বেতন ফেরত দিতে বলা হয়েছে ওই চাকরিপ্রাপকদের। কলকাতা হাইকোর্ট রায়ে জানিয়েছিল, লোকসভার নির্বাচন পর্ব মেটার পরে ১৫ দিনের মধ্যে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে৷
জানা গিয়েছে, সর্বোচ্চ আদালতে স্পেশাল লিভ পিটিশন (SLP) দায়ের করেছে রাজ্য। এদিকে আদালতের নির্দেশের পর থেকে এদের ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। তাছাড়া চাকরিচ্যূতদের অনেকেই ভোটকর্মীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন। বিভ্রান্তির অবসান ঘটিয়ে নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিল, যতদিন SSC আদালতের নির্দেশ কার্যকর করতে বহিষ্কারের নির্দেশ না দিচ্ছে ততদিন ভোটকর্মীর দায়িত্ব পালন করতে হবে চাকরিচ্যূতদের। কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, আদালতের নির্দেশ সম্পর্কে তারা অবহিত। তবে এই শিক্ষকদের বহিষ্কারের দায়িত্ব SSCর। ফলে SSC যতদিন না তাদের বহিষ্কারের নির্দেশ দিচ্ছে ততদিন খাতায় কলমে তারা চাকরি করছেন।
পাশাপাশি আরও একটি সমস্যা দেখা দিয়েছে শিক্ষকদের চাকরি চলে যাওয়ায়। চাকরি পেয়ে ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিয়ে বাড়ি করেছিলেন কেউ কেউ। কেউ আবার নিয়েছিলেন পার্সোনাল লোন। সেই লোন এখন তাঁরা কীভাবে শোধ করবেন তা ভাবাচ্ছে ব্যাঙ্কগুলিকে। শুধুমাত্র জলপাইগুলির ধূপগুড়িতে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কেই চাকরি হারা শিক্ষকদের লোন প্রায় সাত কোটি টাকা! লোন দিয়ে ফাঁপরে পড়েছে সমবায় ব্যাঙ্কগুলিও। তমলুক-ঘাটাল সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক আদালতের নির্দেশে চাকরিহারা বহু শিক্ষকদের লোন দিয়েছে। সেই লোনের পরিমাণও কয়েক কোটি টাকা। সেই টাকা কীভাবে আদায় করা যাবে তা নিয়ে অথৈ জলে সমবায় ব্যাঙ্কটি।
Comments