গাফিলতি ছিল, মেনে নিলেন মুখ্যসচিব। বৃহস্পতিবার জনস্বার্থ মামলার শুনানির সম্ভাবনা
- The Conveyor
- Jan 13
- 2 min read

কলকাতা, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫: বিতর্কের আবহে সোমবার মেদিনীপুর হাসপাতাল সূত্রে খবর মিলল, চিকিৎসার আগে পাঁচ প্রসূতির পরিবারকে দিয়ে মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়া হয়েছিল। গাফিলতি ছিল। স্যালাইন কাণ্ডে মেনে নিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। তিনি সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, বিস্তারিত তদন্ত রিপোর্ট আসার পরে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা করা হবে। সিআইডিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে এই নিয়ে তদন্ত করে দেখা হয়। আগামী দিনে যাতে না হয় সেটা দেখার জন্য নির্দিষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্য়মন্ত্রী। সব ব্যাচের টেস্টিং করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জানালেন মুখ্যসচিব।
নীচে থেকে ওপর পর্যন্ত যারা জড়িত তাদের সবার বিষয়টি চলে আসবে তদন্তে। প্রশাসনিক তদন্ত ও সিআইডি তদন্ত দুটোই করা হচ্ছে। অ্যাকশন নেওয়া হবে। কেন মুচলেকা লেখানো হয়েছে সেটা দেখা হবে। সেটা তদন্ত করে দেখা হবে।
উল্লেখ্য, কয়েক দিন আগে মেদিনীপুর মেডিক্যালে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন পাঁচ প্রসূতি। তাঁদের মধ্যে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। আরও তিন জনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁদের কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। অভিযোগ, হাসপাতালে নিম্ন মানের স্যালাইন দেওয়া হয়েছিল প্রসূতিদের। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে শুক্রবার এক প্রসূতির মৃত্যুর পরেই তাঁকে দেওয়া রিঙ্গার্স ল্যাকটেট (RL) স্যালাইনের গুণমান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ঘটনার পরেই স্বাস্থ্য দফতর কড়া নির্দেশিকা জারি করে। তার পরই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ঠিক কী ঘটেছিল, কার গাফিলতিতে এক প্রসূতির মৃত্যু হল, আদৌ আরএল স্যালাইনের ব্যবহারই এর জন্য দায়ী কি না ইত্যাদি খতিয়ে দেখতে ১৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় স্বাস্থ্য দফতরের তরফে। তারা মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে বেশ কিছু ওষুধ এবং স্যালাইনের নমুনা সংগ্রহ করে।
মুখ্যসচিব জানান, নিয়ম হচ্ছে অস্ত্রোপচার হলে সব সময় এক জন সিনিয়র চিকিৎসকের উপস্থিতিতে জুনিয়র ডাক্তারেরা সেই কাজ করে থাকেন। কিন্তু মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের প্রসূতিদের চিকিৎসার সময় সেই নিয়ম মানা হয়নি। জানা যায়, অসুস্থ প্রসূতিদের কিডনি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্যালাাইন দেওয়ার পরেই তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন নাকি অন্য় কোনও কারণ সেটা দেখা হচ্ছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে শুধু স্যালাইনের সমস্যা নয়, একটি বিশেষ ইঞ্জেকশন দেওয়ার ক্ষেত্রেও প্রটোকল মানা হয়নি। হিউম্যান এরেরর কথা বলা হয়েছে। যে সংস্থার উৎপাদিত স্যালাইন ঘিরে বিতর্ক, তাদের উৎপাদন বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যসচিব।
স্যালাইন-কাণ্ডে জোড়া জনস্বার্থ মামলা দায়ের করার আবেদন গেল কলকাতা হাই কোর্টে। তার মধ্যে একটি জনস্বার্থ মামলা করতে চেয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি। দ্বিতীয়টির জন্য আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আইনজীবী কৌস্তভ বাগচি। দু’টি জনস্বার্থ মামলাই দায়ের করার অনুমতি দিয়েছে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী বৃহস্পতিবার মামলাগুলির শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
Comments