ক্যান্সার নির্ণয় ক্ষেত্রে নয়া আবিষ্কার, আঙুলে ছুঁচ ফুটিয়েই করা যাবে রোগ নির্ণয়
৮ নভেম্বর: ক্যান্সার চিকিৎসায় নয়া দিগন্ত। অন্যান্য অনেক অসুখের মতো এখন থেকে ক্যান্সার হয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করা যাবে আঙুলে ছুঁচ ফুটিয়ে। শেফিল্ড এবং নটিংহ্যাম ট্রেন্ট ইউনিভার্সিটির কয়েক জন গবেষক এর মাঝে আবিষ্কার করেছেন এমনই এক দুর্দান্ত ক্যানসার নির্ণায়ক পরীক্ষা পদ্ধতির। আঙুলের ডগায় সূচ ফুটিয়েই ব্রেন ক্যানসারের মতো অসুখ চিহ্নিত করার পদ্ধতি আবিষ্কার করে ফেলেছেন তাঁরা। বেশির ভাগ মানুষের ক্ষেত্রেই এর উপসর্গ বিশেষ দেখা যায় না। কিন্তু গোড়াতেই যদি এই রোগটিকে চিহ্নিত করা যায়, তাহলে এটি সারিয়ে তোলাও অনেক সহজ হয়ে যায়।
সাধারণত MRI পরীক্ষা করেই এই জাতীয় টিউমার এবং ক্যানসার চিহ্নিত করা যায়। কিন্তু তা যথেষ্ট ব্যয়সাপেক্ষ। পাশাপাশি সেটি চিকিৎসা পরিষেবার ক্ষেত্রেও বড়সড় একটা পদ্ধতি। কিন্তু গবেষকরা যে পরীক্ষা পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন, তাতে বাড়িতে বসেই যে কেউ এই জাতীয় ক্যানসার নিজেই বুঝতে পারবেন। ফলে চিকিৎসা পরিষেবার উপরে চাপ কমবে, খরচ কমবে। শুধু ব্রেন ক্যান্সারই নয়, আগামী দিনে এই পরীক্ষার মাধ্যমে আরও অনেক ধরনের ক্যানসারই আগে থেকে নির্ণয় করা যাবে বলে মনে করছেন তাঁরা। তবে আরও কিছু কাজ বা পরীক্ষা বাকি আছে, তারপরই সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে আসতে চলেছে এই পরীক্ষা পদ্ধতি।
গবেষকরা জানাচ্ছেন, মস্তিষ্কের কয়েকটি বিশেষ টিউমা খুব দ্রুত বাড়ে। এগুলি চট করে ধরা যায় না। কিন্তু মাত্র ৬ মাসের মধ্যেই এগুলি বিরাট আকার নিয়ে নেয়। আর তার ফলেই বহু মানুষের প্রাণ সংশয় দেখা দিতে পারে। প্রতি বছর সারা বিশ্বে প্রায় ২ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয় এই ধরনের ক্যানসারে।
ইউনিভার্সিটি অফ শেফিল্ডস স্কুল অফ মেডিসিন অ্যান্ড পপুলেশন হেলথের ডাঃ ওলা রোমিনি বলেছেন: "অ্যাগ্রেসিভ ব্রেন টিউমার যেমন গ্লিওব্লাস্টোমা প্রায়শই চিকিৎসার পরে ফিরে আসে, তবে সম্ভাব্য প্রাথমিক পর্যায়ে এই পুনরাবৃত্তি সনাক্ত করা বর্তমানে একটি চ্যালেঞ্জ এবং গবেষণার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
“বর্তমানে, রোগীদের প্রায়ই প্রতি তিন থেকে ছয় মাসে ফলো-আপ এমআরআই স্ক্যান করা হয়, তবে মস্তিষ্কের ক্যান্সার প্রতি সপ্তাহে শনাক্ত করতে পারলে তার চিকিৎসাও দ্রুত সেই মতো বদলানো সম্ভব, যা কিনা তিন থেকে ছয় মাস অনেকটাই লম্বা সময় হয়ে যায় এবং দেরি হয়ে যায় সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে। সেক্ষেত্রে নতুন এই আবিষ্কার রোগীদের চিকিৎসা ক্ষেত্রে অনেক সাহায্য করবে।"
নটিংহাম ট্রেন্ট ইউনিভার্সিটির ওয়ান হেলথের অধ্যাপক ফিলিপ উইলসন বলেছেন: "ব্রেন টিউমার প্রথম নির্ণয় করা সম্ভব হলে সর্বোত্তম চিকিৎসার মাধ্যমে তা পরিচালন করা সম্ভব তবে দুর্ভাগ্যবশত, এই রোগের পুনরাবৃত্তি একটি বড় সমস্যা এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে খুব দ্রুত এবং আক্রমণাত্মকভাবে সেগুলি ফিরে আসে। কাজেই রোগীরা নিজেরাই সময়মতো এই পরীক্ষা করতে পারলে চিকিৎসা তুলনামূলকভাবে খুব দ্রুত শুরু করা যাবে এবং রোগীর প্রাণসংশয় প্রচুর মাত্রায় কমে যাবে।"
Commentaires