আমন্ত্রণ রক্ষা করতে দিঘার জগন্নাথমন্দিরে সস্ত্রীক দিলীপ ঘোষ, দল অনুমোদন করেনা, জানালেন সুকান্ত, শুভেন্দু

কলকাতা, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫: খবর ছাপিয়ে খবর! যদিও খবর ছিল, কিন্তু সত্যিই যে এমনটা সত্যি সত্যি ঘটবে কেউ হয়ত ভাবেন নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের পাশেই বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সদ্য বিবাহিত তিনি। স্ত্রীকে নিয়ে মমতার পাশে দিলীপ ঘোষ। এই ছবি দেখে ভিড়মি খাচ্ছেন অনেকেই। রীতিমতো খোশ গল্প করলেন তাঁরা। ফেসবুকে সেই ভিডিয়ো পোস্ট করলেন খোদ রাজ্যের মুখ্য়মন্ত্রী।

দিঘার জগন্নাথমন্দিরে আসার জন্য় আমন্ত্রণ করা হয়েছিল রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও। কিন্তু তিনি যাননি। উলটে তিনি একাধিক প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু দিলীপ ঘোষ দ্বারোদঘাটনের ঘণ্টা দুয়েকের মধ্য়েই হাজির হয়ে গেলেন দিঘার জগন্নাথমন্দিরে। চার নম্বর গেট দিয়ে তিনি মন্দিরে আসেন। এগিয়ে আসেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। উত্তরীয় পরিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয় উভয়কেই। এরপর গর্ভগৃহতে যান দিলীপ ঘোষ ও তাঁর স্ত্রী।

অক্ষয়তৃতীয়ায় দ্বারোদ্ঘাটন হল দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের। অপূর্ব সেই জগন্নাথধাম। মঙ্গলবার হয়েছিল যজ্ঞ। সেদিনই মন্দিরের ধ্বজা উত্তোলন করা হয়েছিল। আর বুধবার সেই জগন্নাথধামের উদ্বোধন করা হল। অত্যন্ত ভক্তি ও নিষ্ঠার সঙ্গে। বুধবার সকাল ১১টা ১০ মিনিট থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে নিমকাঠের তৈরি জগন্নাথের মূর্তিতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা হয়। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ পাথরের জগন্নাথেও প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেন ইকসনের সন্ন্যাসীরা। দেবতার অঙ্গে কুশ স্পর্শ করানো হয়। জগন্নাথদেবের স্নান ও বস্ত্র পরিধানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দেবতার উদ্দেশে নিবেদন করা হয় ৫৬ ভোগ।

তবে আজকে সস্ত্রীক দিলীপের দিঘায় আগমন সব নজর কেড়ে নিয়েছে। দিঘা সফরে গিয়ে দলের অন্দরে আক্রমণের মুখে পড়লেন দিলীপ ঘোষ। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার থেকে প্রধান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, দু’জনের প্রতিক্রিয়াতেই ধরা পড়েছে অসন্তোষ। সুকান্ত স্পষ্ট করে জানালেন, জগন্নাথধামের উদ্বোধনে দিলীপের যাওয়া দল ‘অনুমোদন’ করছে না। দিলীপের নাম না করে শুভেন্দু বলেছেন, ‘‘কারও ব্যক্তিগত চলার ধরন নিয়ে মন্তব্য করব না।’’ এছাড়াও সৌমিত্র খাঁ, অনুপম হাজরা-সহ অনেকে মুখ খুলতে শুরু করেছেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা প্রাক্তন জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে। সুকান্ত বলেন, ‘‘দল মনে করে, যে ভাবে মুর্শিদাবাদে হিন্দুরা মার খেয়েছে, যে ভাবে মন্দির ভাঙা হয়েছে, বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, তার পরে ওখানে (দিঘা জগন্নাথধাম) যাওয়া মানে সেগুলোকে অবজ্ঞা করা। তাই দল সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, আমরা কেউ ওই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যাব না। উনি ব্যক্তিগত ভাবে গিয়েছেন।’’ শুভেন্দু দিলীপের নাম উচ্চারণ না করেও স্পষ্ট কটাক্ষ ছুড়ে দেন, ‘‘কারও ব্যক্তিগত বিষয়, তাঁর মন্তব্য, তাঁর চলার ধরন, তাঁর কাজের ধরন, প্রেম-প্রীতি-ভালবাসা, রাগ-বিরহ-দহন, এসবের উত্তর আমি দিই না। ভবিষ্যতেও দেব না।’’

দেখার, দলের এই প্রতিক্রিয়ার জবাব কিভাবে দেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ!