আগামীকাল থেকে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে সরেজমিনে পরিদর্শন, টাস্ক ফোর্স গঠন, সাসপেনশনে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ

কলকাতা, ২২ অক্টোবর,২০২৪: মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালগুলিতে সিসিটিভি, ওয়াশরুম, রেস্টরুম ও অতিরিক্ত লাইটের কাজ কতদূর এগিয়েছে তা পরিদর্শনের পরিকল্পনা আগামী কাল থেকেই। রাজ্যের ২৮টি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে সরেজমিনে পরিদর্শন হবে। প্রত্যেকটি মেডিক্যাল কলেজ ধরে ধরে বিশেষ সচিব ও সচিব পর্যায়ের আধিকারিকদের নিয়ে টিম তৈরি করা হল। ২৮ অক্টোবরের মধ্যেই প্রথম পরিদর্শনের রিপোর্ট দিতে হবে। কোন কোন তারিখে কোন কোন হাসপাতাল পরিদর্শন হবে তারও বিস্তারিত সূচি তৈরি করে দিল রাজ্য। ২৩ শে অক্টোবর থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত হবে এই পরিদর্শনের কাজ।
এর পাশাপাশি জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি মেনে রাজ্য স্তরে টাস্ক ফোর্স গঠনের নির্দেশিকা জারি করল নবান্ন। বৈঠকের পরের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার রাজ্যভিত্তিক টাস্ক ফোর্স গঠনের কথা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার মানোন্নয়ন, চিকিৎসক-সহ অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা, নিরাপত্তা এবং অভিযোগের নিষ্পত্তি করাই হবে টাস্ক ফোর্সের সদস্যদের কাজ। এ ছাড়াও কেন্দ্রীয় হেল্পলাইন, প্যানিক বাটন সিস্টেম, কেন্দ্রীয় রেফারাল ব্যবস্থার রূপায়ণও খতিয়ে দেখবেন টাস্ক ফোর্সের সদস্যেরা। অভিযোগ জানানোর অভ্যন্তরীণ কমিটি-সহ একাধিক কমিটির কাজও খতিয়ে দেখবে এই টাস্ক ফোর্স। টাস্ক ফোর্সের সদস্যেরা মাসে অন্তত এক বার বৈঠকে বসবেন।
মঙ্গলবার নবান্নের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি, স্বাস্থ্য সচিব এই টাস্ক ফোর্সের সদস্য হবেন। এ ছাড়াও সদস্য হিসাবে থাকবেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার, সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তারদের দুই প্রতিনিধি, জুনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তারদের দুই প্রতিনিধি, রাজ্য অভিযোগ নিষ্পত্তি বিষয়ক কমিটির এক সদস্য এবং পড়ুয়াদের মধ্যে এক জন। তবে তাঁকে মহিলা হতে হবে। টাস্ক ফোর্স গঠনের বিষয়টি উত্থাপন করে জুনিয়র ডাক্তার দেবাশিস হালদার প্রস্তাব করেছিলেন জুনিয়র ডাক্তার এবং ছাত্রদের প্রতিনিধিদের রাখতে। সেই মতোই টাস্ক ফোর্সে প্রতিনিধি রাখা হল।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ৫১ জন জুনিয়র ডাক্তারকে থ্রেট কালচারের অভিযোগে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দিল, কলেজ কর্তৃপক্ষ ওই জুনিয়র ডাক্তারদের সাসপেন্ড করার যে নির্দেশ দিয়েছিলেন তা কার্যকরী নয়। মঙ্গলবার হাই কোর্টে আরজি করের আইনজীবী দাবি করেন, কর্তৃপক্ষ কাউকে সাসপেন্ড করেননি। রেজোলিউশন রাজ্যের কাছে পাঠানো হবে। তার পরেই বিচারপতি চন্দ জানান, এই সাসপেনশন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকার। উল্লেখ্য, এই নিয়ে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী- জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠকে মত বিনিময় হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী এই সাসপেনশন নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন। জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে অনিকেত মাহাতো বিষয়টিকে গুরুত্ব দিলেও হাইকোর্ট কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর কথাতেই সিলমোহর দিল।
তবু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, আদৌ স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ঘুন ধরে পচে যাওয়া সংস্কৃতির মেরামত হবে তো? সময় বলবে।
コメント