top of page

অক্ষয় তৃতীয়ার দিন দিঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন, সেখানে পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী




কলকাতা, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫: জগতের নাথ জগন্নাথ দেব এবারে দিঘায়। তারই উপলক্ষে ঘটা করে সাজানো হয়েছে দিঘাকে। সোমবার দিঘায় পৌঁছে গিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সব কাজ খতিয়ে দেখতে শুরু করেছেন তিনি। তিনি এ দিন ঘুরে দেখেন নবনির্মিত জগন্নাথ মন্দির চত্বর। কথা বলেন মন্দিরের পুরোহিতদের সঙ্গে। মন্দিরের স্থাপত্যের প্রশংসাও শোনা যায় তাঁর মুখে। এখন দিঘার জগন্নাথধামের উদ্বোধনের কাউন্ট ডাউন চলছে। এক কোটি মন্ত্রোচ্চারণে জগন্নাথদেবের প্রাণপ্রতিষ্ঠা হবে। তারপর হবে জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন।

এ দিন হাওড়ার ডুমুরজলা হেলিপ্যাড থেকে হেলিকপ্টারে দিঘায় যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাওড়া থেকে সম্প্রীতি, ঐক্য এবং শান্তি বজায় রাখার বার্তা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিঘায় পৌঁছে তিনি বলেন, ‘পরশু ঠাকুর প্রতিস্থাপন।দ্বারোদঘাটন হবে আড়াইটে থেকে তিনটের মধ্যে। তারপর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে।’ তাঁর সঙ্গে এখন রয়েছেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, অরূপ বিশ্বাস, সুজিত বসু এবং স্থানীয় নেতা সুপ্রকাশ গিরি। মিখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, ‘‌দিঘায় সমুদ্র ছিল। সেখানে একটা জগন্নাথ মন্দির হলে তা সব পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্র হবে। এই ভাবনা থেকেই এখানে জগন্নাথ মন্দির গড়ে উঠেছে। আগামীদিনে এই দিঘার জগন্নাথ মন্দির আন্তর্জাতিক পর্যটনকেন্দ্র হয়ে উঠবে।’‌ ভিড় সামলে সুষ্ঠুভাবে এই অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে সব ধরনের ব্যবস্থা করেছে জেলা প্রশাসন।

ইতিমধ্যে গোটা দিঘা আলোয় ঝলমল করছে। চন্দননগরের আলোক শিল্পীদের দিয়ে গোটা দিঘাকে রঙিন আলোর মোড়কে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। বাদ যায়নি দিঘার পার্ক থেকে সমুদ্র সৈকত, সর্বত্রই মায়াবী রঙিন আলোর ছোঁয়া। ওল্ড দিঘা থেকে শুরু করে নিউ দিঘা পর্যন্ত একাধিক আলোর তোরণ তৈরি করা হয়েছে। গোটা রাস্তা টুনি বাল্ব দিয়েও মুড়ে ফেলা হয়েছে। প্রায় ১০ থেকে ১৫ মিটার অন্তর দেওয়া হয়েছে রঙিন মুভিং লাইট। রাস্তায় প্রায় আটটি আলোর গেট তৈরি করা হয়েছে। সেই গেটে জগন্নাথদেবের পাশাপাশি রয়েছে বলরাম ও সুভদ্রাও। আলোর মাধ্যমে গড়ে তোলা হয়েছে জগন্নাথদেবের তিলক, মুকুট আবার কোথাও তুলে ধরা হয়েছে, জগন্নাথের চোখ। জগন্নাথ মন্দিরের সামনে অবস্থিত নেচার পার্কও রঙিন আলোয় মুড়ে ফেলা হয়েছে। জলাভূমিতে রঙিন আলোর মাঝে ফোয়ারা দিয়ে রঙিন জলরাশি তৈরি করা হয়েছে। মুভিং লাইটে কোথাও ফুটে উঠছে আলপনা, আবার কোথাও আকাশের তারা।

যাবতীয় উপাচার মেনে শুরু শুরু হয়েছে নানা আচার অনুষ্ঠান পালনের। মন্দিরের ভিতের আচার পালনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ইসকনের সন্নাসীরা। আপাতত তাঁরা সংখ্যায় ৬০ জন। এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে সূত্রের খবর। এছাড়া মন্দিরের বাইরের যাবতীয় পুজোপালনের দায়িত্বে রয়েছেন পুরীর মন্দিরের প্রধান রাজেশ দয়িতাপতি সহ ৩৫ জন। দিঘা জগন্নাথ ধামে যজ্ঞকুণ্ড, কলসস্থাপন করা হয়েছে দেশের বিভিন্ন তীর্থক্ষেত্র থেকে মঙ্গল-কলসে করে আনা হয়েছে জল। মূল পুজো শুরু ২৮ এপ্রিল সোমবার রাত থেকে। ২৯ এপ্রিল সূচনা মহাযজ্ঞের। মহাযজ্ঞের জন্য পেঁড়া, খাজা, গজা, রসগোল্লা নানা মিষ্টি তৈরি হয়ে গিয়েছে। ৩০ এপ্রিল অক্ষয় তৃতীয়ার দিন সকালে প্রাণ প্রতিষ্ঠা। তারপর স্নান পর্ব। ভগবানের অভিষেক। ৫৬ ভোগ নিবেদন করা হবে। দরজা খুলবে মন্দিরের। শুরু হবে মহা -আরতি, নিত্য পুজো। ঠিক তার পরেই মন্দিরের দরজা খুলে দেওয়া হবে জন সাধারণের জন্য।

জগন্নাথ মন্দিরের প্রবেশপথেই রয়েছে তিনটি দীপস্তম্ভ। পুরীর মতো এই মন্দিরেও চারটি দুয়ার আছে। গোটা মন্দিরটি তৈরি হয়েছে রাজস্থানের গোলাপি বেলেপাথর দিয়ে। রাজস্থানের ৮০০ জন কারিগর দিনরাত পরিশ্রম করে এই মন্দির গড়ে তুলেছেন। যা এখন খতিয়ে দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী। মন্দিরের সিংহদ্বারের সামনে রয়েছে কালো রঙের অরুণ স্তম্ভ। কালো পাথর দিয়ে ৩৪ ফুট লম্বা ১৮মুখী এই অরুণ স্তম্ভটি তৈরি করা হয়েছে। স্তম্ভের একদম মাথায় অরুণা মূর্তি। অরুণ স্তম্ভের সামনের সিংহদ্বারে ঢুকলে সোজাসুজি জগন্নাথদেবের মূর্তি দেখতে পাওয়া যাবে। এই মন্দিরের সিংহদ্বারের বিপরীতে রয়েছে ব্যাঘ্রদ্বার, উত্তরে হস্তিদ্বার এবং দক্ষিণে অশ্বদ্বার। মন্দিরের প্রথমে আছে ভোগ মণ্ডপ। তারও চারটি দরজা। আছে নাটমন্দির, যা ১৬টি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে। নাটমন্দিরের দেওয়ালে আছে কালো পাথরে তৈরি ছোট ছোট দশাবতারের মূর্তি। চারটি স্তম্ভের উপরে দাঁড়িয়ে আছে জগমোহন। জগমোহনের পরই দেখা যাবে গর্ভগৃহ বা মূল মন্দির। সেখানেই সিংহাসনে বিরাজ করছেন জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রা। ভোগমণ্ডপ ও নাটমন্দিরের মধ্যে আছে গরুড়স্তম্ভ। পুরীর মতো এখানেও আছে লক্ষ্মীমন্দির। জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার যে মূর্তিতে পুজো হবে সেটা নিমকাঠের তৈরি।

 
 
 

Comments

Rated 0 out of 5 stars.
No ratings yet

Add a rating

Top Stories

প্রতিদিনের খবর এবং বিভিন্ন ফিচার ভিত্তিক লেখা, যেখানে খবরের সত্যতা তথা লেখনীর উৎকৃষ্টতা প্রাধান্য পায়। ফিচার ছাড়াও যে কোনও রকম লেখনী শুধুমাত্র উৎকৃষ্টতার নিরিখে গুরুত্ব পাবে এই সাইটে

Thanks for subscribing!

  • Whatsapp
  • Youtube
  • Instagram
  • Facebook
  • Twitter

The Conveyor

bottom of page